জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে বরিশাল নগরীর আলোচিত ‘লাচিন ভবনের’ মালিক ও ঝালকাঠি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুরুল আমিন সিকদারকে পৃথক দুটি ধারায় ৬ বছরের কারাদণ্ড ও ৩ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে অবৈধভাবে স্ত্রী ইসরাত জাহানের নামে করা নগরীর আলেকান্দা এলাকায় ১২ শতাংশ জমির ওপর ৫ তলা বিশিষ্ট লাচিন ভবন (বর্তমানে ওই ভবনে আয়কর বিভাগের সার্কেল অফিস) এবং নাবালক ছেলে আদিল আমিন লাচিনের নামে ঢাকার বড় মগবাজারে ইস্টার্ন টিউলিপ ভবনের ১৬২০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। বরিশাল বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. মহসিনুল হক বুধবার বিকালে এই রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় নুরুল আমিন আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি উজিরপুর উপজেলা সদর বাজারের মৃত ইয়াকুব আলী সিকদারের ছেলে।
রায়ে আদালত আসামির স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বিক্রি করে অর্থদণ্ডের টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে জমা দেওয়ার এখতিয়ার বরিশাল ও ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রটকে দিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় কোষাগারে অর্থ জমার কপি আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী রবিউল আলম জানান, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ঝালকাঠি জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী নুরুল আমিন সিকদারের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ২৮ অক্টোবর বরিশাল দুদকের সহকারী পরিচালক এমএইচ রহমতউল্লাহ একটি মামলা করেন। মামলায় নুরুল আমিন সিকদারের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৩৯ হাজার ৬৪১ টাকা, স্থাবর ও মূল্যবান সম্পদ অর্জন, লাচিন ভবন ও ইস্টার্ন টিউলিপ ভবনের ফ্ল্যাট নির্মাণ ব্যয়ে ৫১ লাখ ৩২ হাজার ১৮ টাকার তথ্য গোপন এবং উজিরপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে দানপত্র দলিলে নিজ নামে ৬ জন নিকট আত্মীয়ের কাছ থেকে ৪.২৫ শতাংশ জমি ক্রয় করার তথ্য গোপন করার অভিযোগ করা হয়। এ মামলায় নুরুল আমিন সিকদারকে অভিযুক্ত করে ২০১০ সালের ৩০ আগস্ট দুদকের সহকারী পরিচালক এমএইচ রহমতউল্লাহ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। পরে আদালত ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে পৃথক দুই ধারায় আসামিকে ৩ বছর করে মোট ৬ বছর কারাদণ্ড এবং ৩ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজা ও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন আদালত।