জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি ও স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক আ স ম আবদুর রব বলেছেন, 'ভোটার তালিকা' এবং 'জাতীয় পরিচয়পত্র' একটি 'সমন্বিত প্রকল্প (Integrated Project) যা নির্বাচন কমিশন কর্তৃক পরিচালিত হচ্ছে। এ প্রকল্প হচ্ছে 'অবিচ্ছেদ্য' এবং 'অখন্ডিত' প্রকল্প। এ প্রকল্পের মালিকানা প্রজাতন্ত্রের পক্ষে কেবলমাত্র নির্বাচন কমিশনের। ভোটার তালিকার সমন্বিত এই প্রকল্প থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র আলাদা করার কোন সাংবিধানিক ক্ষমতা নির্বাহী বিভাগের নেই।
তিনি আজ এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
আ স ম রব বলেন, ভোটার তালিকার সমন্বিত প্রকল্প খণ্ডিতকরণ বা কমিশনের সম্পদ বা জনবল বিভক্তিকরণ, বা ভোটার তালিকার ডাটাবেজ নির্বাহী বিভাগে স্থানান্তরকরণ - এ সবই হবে সংবিধান বহির্ভূত, বেআইনি এবং অসাংবিধানিক। যেহেতু ভোটার তালিকা এবং জাতীয় পরিচয় পত্র একটি সমন্বিত প্রকল্প সুতরাং এই সমন্বিত প্রকল্পে সরকারের কোন ধরনের হস্তক্ষেপ বা এর স্থানান্তরে বড় ধরনের সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করবে।
তিনি বলেন, ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণের তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত যা সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদ নিশ্চিত করেছে। সুতরাং ভোটার তালিকা সংক্রান্ত কর্মে তদারক করা, নির্দেশ দেয়া এবং পরিচালনা করার ক্ষমতা কেবলমাত্র নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচনী গোটা ব্যবস্থা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাংলাদেশের সংবিধান ১১৮ এবং ১১৯ অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতা এবং দায়িত্ব বিভাজিত করে দিয়েছে। সংবিধান ক্ষমতার যে বিভাজন নির্ধারিত করে দিয়েছে যা কোন কিছু দিয়ে প্রতিস্থাপনযোগ্য নয়।
আ স ম রব আরও বলেন, ভোটার তালিকা প্রণয়নে সারাদেশের সার্ভার স্টেশনসহ সকল ডাটাবেজ নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব সম্পত্তি। বিশ্বব্যাংকসহ দাতা সংস্থা সমূহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের জন্যই অর্থ জোগান দিয়েছে, নির্বাহী বিভাগের স্থাপনা বৃদ্ধির জন্য নয়। নির্বাচন কমিশন গত ১৩ বছর যাবত সেনাবাহিনীর পূর্ণ সহযোগিতায় যে দক্ষতার সাথে এ প্রকল্পের মাধ্যমে ডিজিটাল ভোটার তালিকা প্রণয়নের বিরল ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন তা সরকারের রাজনৈতিক দূরভিসন্ধির নিকট কোনক্রমেই ধ্বংস হতে দেয়া যায় না। নির্বাচনী ব্যবস্থা, এবং নির্বাচন কমিশন এমনিতেই ধ্বংসপ্রাপ্ত। অন্তত কাগজপত্রে হলেও সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো আপাতত রক্ষা হোক। অদূর ভবিষ্যতে সংবিধানের চেতনা ভিত্তিতে রাষ্ট্রপরিচালনার অবশ্যই সুযোগ সৃষ্টি হবে, জনগণের ভোট দেয়ার অধিকার নিশ্চিত হবে এবং নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বাধীনভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে পারবে। সে লক্ষ্যেই নির্বাচন কমিশনকে সুরক্ষা দিতে হবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন