১২ জুন, ২০২১ ১৪:৫১
তদন্ত কমিটি গঠন

মায়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে মার খেলেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই ভাই

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

মায়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে মার খেলেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই ভাই

রশিদ ছাড়া বেশি টাকা নেওয়ার প্রতিবাদ করায় হাসপাতালের কর্মচারীরা দুই ভাইকে মারধর করেন

কিডনি রোগে আক্রান্ত মাকে চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করতে নিয়ে এসে কর্মচারীদের হাতে মারপিটের শিকার হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই ভাই। রোগী ভর্তি ফি ৩০ টাকার স্থলে ১০০ টাকা জোর করে আদায় করার প্রতিবাদ করায় অসুস্থ মায়ের সামনে দুই ভাই রাশেদ ও রেজাউলকে অমানুষিক নির্যাতন করে গুরুতর আহত করে কতিপয় কর্মচারী।

পরে আহত অবস্থায় দুই ভাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার রাতে। এ ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক একটি তদন্ত কমিটি করেছে। তবে এই বিষয়ে কোনো কর্মচারী এবং তাদের নেতারা মুখ খুলছেন না। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত দুই শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার কিশামত শেরপুর গ্রামে। দুই ভাইয়ের মধ্যে রাশেদ করিম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং বড় ভাই রেয়াজুল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষা বর্ষের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তাদের মা রহিমা বেগম কিডনি রোগী সপ্তাহে তিনদিন তাকে হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করতে হয়। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় শুক্রবার সন্ধ্যায় বাসা থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন।

এরপর ভর্তি করার জন্য জরুরি বিভাগে টিকেট নিতে গেলে কর্তব্যরত কর্মচারীকে ১০০ টাকা দিলে সে টাকা ফেরত না দিয়ে বলে ১০০ টাকা লাগবে। এ সময় তারা বলে রোগী ভর্তির জন্য টিকেটের মূল্য ৩০ টাকা তা হলে কেন ১০০ টাকা নিচ্ছেন। ১০০ টাকা নিলে রশিদ দেন। এ কথা বলার সাথে সাথে কর্মচারীরা রাশেদকে গালে কয়েকটি থাপ্পড় মারে। এ সময় জরুরি বিভাগে থাকা অন্যান্য কর্মচারীরা এক যোগে রাশেদের উপর হামলা চালিয়ে কিল ঘুষি লাথি মারতে থাকে।

এমন অবস্থায় বড় ভাই রেয়াজুল এগিয়ে এলে দুই ভাইকে অমানুষিক ভাবে মারধর করে আহত করা হয়। এরপর জরুরি বিভাগের একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরে গুরতর আহত অবস্থায় তাদের হাসপাতালের ১৫ নম্বর সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানেই চিকিৎসাধীন আছে। 

এ ব্যাপারে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল করিম জানান, এ বিষয়ে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক  ডা. মোস্তফা জামান চৌধুরীকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্তে হাসপাতালের কর্মচারীরা দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বেরোবি প্রক্টর গোলাম রব্বানী বলেন, বিষয়টি শোনার পর পুলিশকে অবহিত করা হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এদিকে বেরোবি’র সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার না হলে তারা মানববন্ধনসহ কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিবেন।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর