১৭ জুন, ২০২১ ১৭:২৬

রংপুরে সংরক্ষণের অভাবে বছরে ৫০ কোটি টাকার আম নষ্ট

নজরুল মৃধা, রংপুর

রংপুরে সংরক্ষণের অভাবে বছরে ৫০ কোটি টাকার আম নষ্ট

সঠিকভাবে সংরক্ষণের অভাবে প্রতি বছর ৫০ কোটি টাকার বেশি আম নষ্ট হচ্ছে রংপুরে। এছাড়া কাঁঠাল, লিচু, আনারস, পেঁপে ইত্যাদি ফল গড়ে মোট উৎপাদনের ২০ থেকে ৪০ শতাংশ নষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘদিন থেকে রংপুরে একটি ফল সংরক্ষণাগার স্থাপনের দাবি উঠলেও কোনো সরকারই বিষয়টি আমলে নেননি। 

রংপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার রংপুর জেলায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আমের ফলন হয়েছে। এর মধ্যে হাড়িভাঙ্গার ফলন হয়েছে দেড় হাজার হেক্টরের ওপর। প্রতি হেক্টরে ফলন ধরা হয়েছে গড়ে ১০ মেট্রিকটন। সেই হিসেবে এবার আমের উৎপাদন আশা করা হচ্ছে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন অর্থাৎ ৩৫ লাখ কেজি। প্রতি কেজি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হলে ১৭৫ কোটি টাকার আম বিক্রি হওয়ার কথা।

কিন্তু সঠিকভাবে আম সংরক্ষণ করতে না পারায় প্রতিবছর আমের ২৫ থেকে ২৭ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়। যার বাজার মূল্য ৫০ কোটি টাকার ওপরে।  এছাড়া কাঁঠাল ৪০ থেকে ৪৩ শতাংশ, কলা ২০ থেকে ২৪ শতাংশ, লিচু ২০ থেকে ২৪ শতাংশ,আনারস ৪০ থেকে ৪৩ শতাংশ ও পেঁপে ২৫ থেকে ৩৯ শতাংশ সঠিকভাবে সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয় প্রতি বছর।   

হাড়িভাঙ্গা আমের ফলন বেশি হলেও ফজলি, কেরোয়া, এছাহাক তেলি, ছাইবুদ্দিন, আশ্বীনি, সাদা নেংড়া, কালা নেংড়া, কলিকাতা নেংড়া, মিশ্রী ভোগ, গোপাল ভোগ, আম্রপালি, সাদা রচি, চোচা, আঁটিসহ হরেক প্রজাতির আম রয়েছে। তবে হাড়িভাঙ্গা আমের চাহিদাই বেশি। একটি হাড়িভাঙ্গা আমের ওজন ৪ শ থেকে ৪শ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। 

কৃষি অফিসের তথ্য মতে ২০ জুন থেকে বাজারে সুস্বাদু হাড়িভাঙা আম পাওয়া কথা থাকলে সপ্তাহখানেক আগে থেকে হাড়িভাঙ্গাসহ অন্যান্য প্রজাতির আম বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। করোনার কারণে এই আম পরিবহন হবে কিভাবে এ নিয়ে বাগান মালিক ও মৌসুমি আম ব্যবসায়ীরা চিন্তিত রয়েছেন। তবে কৃষি বিভাগের সরকারিভাবে এই আম বাজারজাত করার পরিকল্পনা করেছে। প্রতিবছর হাঁড়িভাঙা আম বিক্রি করে চাষিরা প্রায় ২০০ কোটি টাকা ঘরে তোলে। কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতি পরোক্ষভাবে হাঁড়িভাঙা আম চাষিদের স্বপ্নে আঘাত হানতে পারে। এখন প্রতি কেজি হাড়িভাঙ্গা আম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। তবে এই দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে। 

কৃষি বিভাগের ঢাকা খামারবাড়ির অতিরিক্ত সহকারী পরিচালক আবু সায়েম বলেন, মৌসুমের সময় আমাদের দেশের অনেক ফল ও সবজি সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। মৌসুমে অধিক ফল ও সবজি উৎপাদনের ফলে কৃষকরা অনেক সময় ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া কৃষকরা সংরক্ষণের সঠিক পদ্ধতি না জানার কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর