টাকার অভাবে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারানো তিন বছরের শিশু আঁখির দাফন করতে পারছিলেন না বাবা। পরে এগিয়ে এলেন এলাকাবাসী। রাস্তায় দাঁড়িয়ে টাকা তুলে পরিবারের হাতে তুলে দিলে মৃত্যুর প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর শিশু আঁখি মণিকে দাফন করেন তার বাবা-মা।
সাভারের আশুলিয়ার ভাদাইল পবনারটেক এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে লাগা আগুনে পুড়ে মারা যায় আঁখি। সেসময় ঘরের ভেতর অন্য দুই বন্ধুকে নিয়ে খেলছিল সে। আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়লে আঁখি জীবন বাঁচাতে ভয়ে খাটের নিচে গিয়ে লুকায়। প্রতিবেশীরা বাকি দুই শিশুকে উদ্ধার করতে পারলেও ততক্ষণে দগ্ধ হয়ে আঁখি মারা যায়। পোশাক শ্রমিক বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ছিল আঁখিমণি। তারা ২ জন স্থানীয় একটি পোশাক কারখানার অপারেটর হিসেবে কাজ করেন।
প্রতিবেশী মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘আঁখির বাবা-মা কারখানায় কাজে গেলে আঁখিকে পাশের বাসায় তার ফুপুর বাড়িতে রেখে যেতেন। বৃহস্পতিবার রাতে ঘরে খেলছিল আঁখি ও তার ফুপাতো ভাইসহ তিন শিশু। এ সময় হঠাৎ বাড়িটির ১২টি কক্ষে আগুন ধরে যায়। দ্রুত ঘর থেকে দুই শিশুকে উদ্ধার করেন এক প্রতিবেশী। কিন্তু আঁখি ভয়ে খাটের নিচে লুকিয়ে পড়ায় তাকে আর খুঁজে পায়নি।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় সড়কে টাকা উত্তোলনকারী একজন বলেন, ‘মেয়েটির বাবা-মা অনেক গরিব। লাশ দাফনের জন্যও তাদের সাহায্যের প্রয়োজন হয়েছে। এলাকার কোনো জন প্রতিনিধি বা বিত্তবান কেউ সহায়তার জন্য এগিয়ে আসেননি। তাই আমরা মেয়েটার দাফনের জন্য সবার কাছ থেকে টাকা তুলছি। যে যা পারছে দিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত ২৪ হাজার টাকা উঠছে। এরপর রাতে স্থানীয় একটি কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে ।
ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউস পরিদর্শক জিহাদ হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডে মোট ১২টি কক্ষ পুড়ে গেছে। একজন মারা গেলেও আর কোন হতাহতের খবর পাইনি। রাতেই লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সাভার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাজাহারুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এটি মানুষ হিসেবে মানবিক দায়িত্ব। মানুষের সচেতন হওয়া উচিত। আমরা এক কঠিন দুঃসময় পার করছি। আখির বাবা-মা অনেক গরিব আমি তাদের দায়িত্ব নিবো।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল