২৪ জানুয়ারি, ২০২২ ১৪:৫০

আবারও মাদ্রাসায় পড়ার সুযোগ পেল ধর্ষণের শিকার সেই ছাত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

আবারও মাদ্রাসায় পড়ার সুযোগ পেল ধর্ষণের শিকার সেই ছাত্রী

ফাইল ছবি

জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে আবারও মাদ্রাসায় পড়ার সুযোগ পেলো রাজশাহীর ওই শিশু শিক্ষার্থী। এর আগে, ধর্ষণের শিকার হয়েছিল বলে শিশুটির ভর্তি বাতিল করেছিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। 
 
এ নিয়ে দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হলে রবিবার (১৩ জানুয়ারী) তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল। আজ সোমবার সকালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জয়া মারিয়া পেরেরার নেতৃত্বে একটি দল যায় নগরীর হড়গ্রাম এলাকার ওই মাদ্রাসায়। এসময় মাদ্রাসার পরিচালক হাবিবুল্লাহ ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন এবং ওই ছাত্রীকে আবারও পড়ার সুযোগ দিতে অঙ্গীকার করেন। 
 
এসময় জেলা শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিন, রাজপাড়া থানা শিক্ষা অফিসার মিজানুর রহমানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 
অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জয়া মারিয়া পেরেরা জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তারা ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে মাদ্রাসাটিতে আসেন। এসময় শিশুটির অভিভাবক, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। মাদ্রাসাটির পরিচালক ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। তিনি ওই শিশুকে আবারও মাদ্রাসায় পড়ার সুযোগ দিতে অঙ্গীকার করেন। সেইসঙ্গে শিশুটি যেহেতু দরিদ্র পরিবারের তাই তার মাসিক বেতনও মওকুফের কথা জানিয়েছেন।
 
এর আগে, রাজশাহীতে আট বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হওয়ায় তার মাদ্রাসায় ভর্তি বাতিলের ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন জেলাপ্রশাসক আবদুল জলিল। গতকাল রবিবার দুপুরে তিনি এ নির্দেশনা দেন। এরপরই আজ সকালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আবারও শিশুটিকে মাদ্রাসায় পড়ার ব্যবস্থা করেন।
 
ওই শিশুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী শিশুটির বাবা শারীরিক প্রতিবন্ধী। নিজের কোনো ভিটেমাটি নেই। রেলের জমির বস্তিতে একটি ঘর করে বসবাস করেন। এক সড়ক দুর্ঘটনায় শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে গেলেও শিশুটির বাবা এখন অটোরিকশা চালান। একটি বেসরকারি হাসপাতালে আয়া হিসেবে চাকরি করেন শিশুর মা। 
 
ভুক্তভোগী শিশুর মা বলেন, ২০২০ সালের ২১ মার্চ তিনি ছিলেন হাসপাতালে। ওইদিন বাড়ির পাশের নির্জন স্থানে শিশুটিকে ধর্ষণ করে এক কিশোর। ধারণ করা হয় ভিডিও। ঘটনা জানাজানি হলে পুলিশ ওই কিশোরকে আটক করে। জব্দ করা হয় মুঠোফোন। পরে এ ঘটনায় ওই বছরের ২২ মার্চ মামলা করা হয়। ওই মামলায় ওই কিশোর এখন কারাগারে।
 
শিশুটির মা বলেন, ১০ দিন আগে রাজশাহী নগরীর উম্মাহাতুল মু’মিনীন মহিলা মাদ্রাসায় তার মেয়েকে ভর্তি করা হয়েছিল। বেসরকারি এই মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু ভর্তির তিনদিন পর তার মেয়েকে মাদ্রাসার গেটের বাইরে বের করে দেওয়া হয়। তারপর গেট লাগিয়ে দেওয়া হয়। মেয়েটা গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে তখন কাঁদছিল। পরে মাদ্রাসার পরিচালক তার মেয়েকে দূরে কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে দিতে বলেন। পরে তিনি জানতে পারেন তার মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে এ কারণে তাকে মাদ্রাসায় রাখা হচ্ছে না।
 
 
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ  

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর