বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের ধরণটা শুরু থেকেই জিনগত পরিবর্তন লক্ষণীয়। বর্তমানে চলছে ভাইরাসটির ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। চট্টগ্রামে আক্রান্ত ১০ জনের জিনোম সিকুয়েন্স টেস্ট করা হয়। এর মধ্যে ১০ জনেরই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের (B1.1529) উপস্থিতি পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া যায়।
এর আগে গত ২০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) একদল গবেষক চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণের ৭৫ শতাংশই ওমিক্রনে আক্রান্ত বলে তথ্য দেন। এবার প্রায় অভিন্ন তথ্য দিলেন সিভাসু গবেষকরা।
সিভাসুর উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের নির্দেশনা এবং পোল্ট্রি রিসার্চ ও ট্রেনিং সেন্টার (পিআরটিসি) ও সিভাসু’র আর্থিক সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক গবেষণাটি পরিচালনা করেন। গবেষণা কার্যক্রমে ১০টি নমুনা থেকে SARS-CoV-2 বা নোভেল করোনাভাইরাসে পূর্ণাঙ্গ জীবনরহস্য বা জিনোম সিকোয়েন্সের ফলাফলে ওমিক্রন শনাক্ত হয়। কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি মূল্যায়নে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। গবেষণাটি পরিচালনা করেন, সিভাসুর প্রফেসর ড. পরিতোষ কুমার বিশ্বাস, প্রফেসর ড. শারমিন চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা, ডা. প্রণেশ দত্ত, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম ও ডা. তানভীর আহমদ নিজামী।
গবেষক দলের সদস্য সহকারী অধ্যাপক ডা. ইফতেখার আহমেদ বলেন, ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীদের উপসর্গ ছিল খুবই মৃদু। অধিকাংশ রোগীর গলা ব্যথা, সর্দি ও মৃদু জ্বর ছাড়া মারাত্মক কোনো লক্ষণ ছিল না। বেশিরভাগ রোগীর শরীরে ‘বিএ২’ ধরণের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। তা তেমন বিপজ্জনক নয়, তবে অধিকতর সংক্রমণশীল।
গবেষণায় বলা হয়, দশটি নমুনার মধ্যে সবকটি নমুনায় অমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট (B1.1529) এর উপস্থিতি রয়েছে। এই দশটির মধ্যে ৪টি নমুনায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের অধিকতর সংক্রমণশীল লিনিয়েজ (BA.2) শনাক্ত করা হয়। সিকোয়েন্সকৃত নমুনা সমূহের বিশ্লেষণে উল্লেখযোগ্য মিউটিশনের উপস্থিতি পাওয়া যায় (সর্বোচ্চ ৬৮টি স্থানে)।
শনাক্তকৃত নমুনাগুলো চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন বয়সের করোনায় আক্রান্ত রোগী থেকে সংগৃহীত ছিল। এদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ ও একজন মহিলা। আক্রান্ত রোগীদের উপসর্গ ছিল খুবই মৃদু। অধিকাংশ রোগীর গলা ব্যথা, সর্দি ও মৃদু জ্বর ছাড়া মারাত্মক কোনো লক্ষণ, যেমন শ্বাসকষ্ট, অতিরিক্ত অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা পরিলক্ষিত হয়নি। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীর হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয়নি এবং কোনো রোগী মৃত্যুবরণ করেননি।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর