বাবার শেষকৃত্য শেষে ফেরার পথে পিকআপের চাপায় নিঃস্ব সেই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য তিলোত্তমা সিকদার। আজ বৃহস্পতিবার ওই পরিবারে নিহত ছয় ভাইয়ের বিধবা স্ত্রীদের প্রত্যেককে একটি করে সেলাই মেশিন উপহার দেন তিনি।
‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২২’ থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে সংগ্রামী নারীদের ৫০টি সেলাই মেশিন এবং ছয়টি ল্যাপটপ বিতরণের ঘোষণার অংশ হিসেবে তিলোত্তমা এ সেলাই মেশিন উপহার দিলেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ভোরে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় বাবার শ্রাদ্ধ শেষে বাড়ি ফেরার পথে পিকআপচাপায় একই পরিবারের ছয় সদস্য নিহত হন।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সহসভাপতি ঢাবির সিনেট সদস্য তিলোত্তমা সিকদার বলেন, একই পরিবারের কর্মক্ষম ছয় ভাইয়ের এক সঙ্গে নিহত হওয়ার ঘটনা খুব কষ্টের। এ পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমি চাই, তারা আত্মসংগ্রামী হয়ে উঠুক। তিনি সরকারের পক্ষ থেকে এ পরিবারকে সহযোগিতা ও স্থায়ী কর্ম বা আয়ের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানান।
তিলোত্তমা বলেন, সাময়িকভাবে এ পরিবার যেন জীবিকা নির্বাহ করতে পারে সেজন্য আমি প্রত্যেককে একটি করে সেলাই মেশিন উপহার দিয়েছি।
এ সময় তিলোত্তমা সিকদার আরও বলেন, আমার জীবনের পরম সৌভাগ্য যে, আমি ওআইসির মতো একটি সংস্থা থেকে প্রধানমন্ত্রীর নামে এ পুরস্কারটি পেয়েছি। সেখান থেকে যে অর্থ পেয়েছি তার সঙ্গে নাভানা গ্রুপ আমাকে সহযোগিতা করেছে। তারা আমাকে ৫০টি সেলাই মেশিন দিয়েছে, যা আমি সংগ্রামী নারীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
এ সময় এ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। তারা সার্বিক খোঁজখবর নেন এবং অব্যাহত সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
পরিবার পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকার যেন তাদের এলাকায় একটি বাড়ি বানিয়ে নিরাপদে বসবাসের সুযোগ করে দেন এবং কর্মের ব্যবস্থা করে দেন। পরিবারের সদস্যরা কারও দয়ায় নয়, নিজেরা কাজ করে সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে চান বলে জানান ছাত্রলীগ নেতা তিলোত্তমা।
উল্লেখ্য, করোনাকালীন সংকটময় সময় জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ এবং বৈশ্বিক যুবাদের অনন্য মানবিক অবদানের স্বীকৃতি দিতে ‘ঢাকা ওআইসি ইয়্যুথ ক্যাপিটাল ২০২০’-এর অধীনে প্রথমবারের মতো ‘শেখ হাসিনা ইয়্যুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২০’ প্রদান করা হয়।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় যুবকদের একক ও দলীয়ভাবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার, সার্টিফিকেট ও সম্মাননা প্রদান করা হয়ে।
মানবিক কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এ অ্যাওয়ার্ড পান ডাকসুর সাবেক সদস্য তিলোত্তমা শিকদার। ২০২০ সালে করোনার সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রমজান মাসে তিলোত্তমা সকদার রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে রোজাদারদের মধ্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করে সাড়া ফেলেন। এর আগে তিলোত্তমা সিকদার ঢাবি ছাত্রীদের জন্য ক্যাম্পাসে ১০ টাকায় স্যানিটারি ন্যাপকিন দিতে ভেন্ডিং মেশিন স্থাপনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/এএ