বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের আয়োজিত জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৬ বালিকা দাবা প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে জান্নাতুল ফেরদৌসী। পাশাপাশি সে মালদ্বীপে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান ইয়ুথ চ্যাম্পিয়নশীপে অংশগ্রহণ করার গৌরব অর্জন করেছে। দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার ইতিহাসে সে প্রথম এই কৃতিত্ব অর্জন করেছে।
নগরীর বড় বনগ্ৰাম এলাকার জান্নাতুল ফেরদৌসীর দেশসেরা গ্ৰান্ডমাস্টার দাবাড়ু হওয়ার স্বপ্ন পূরণে পাশে দাঁড়িয়েছেন জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল। উন্নয়ন প্রশিক্ষণ গ্ৰহণের উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মো. ওয়াহেদুল নবী অনু এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার দাবা সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাউসার আলী ইতি।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল বলেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে মেয়েদের জাতীয় দাবায় দারুণ চমক দেখিয়েছেন জান্নাতুল ফেরদৌসী। তাকে জেলা প্রশাসন সব রকমভাবে সাহায্য করতে প্রস্তুত। জান্নাতুলের নিষ্ঠা এবং অধ্যবসায় অনেকের কাছে অনুপ্রেরণার এক জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে থাকবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, জান্নাতুল জীবনে অনেক বড়ো দাবাড়ু হবেন।
জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল আরও বলেন, জান্নাতুল ফেরদৌসী বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের আয়োজিত জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৬ দাবা প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এছাড়াও সে মালদ্বীপে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান ইয়ুথ চ্যাম্পিয়নশীপে অংশগ্রহণ করার গৌরব অর্জন করেছে। রাজশাহীতে দাবার ইতিহাসে এই প্রথম।
জান্নাতুল ফেরদৌসী বলেন, আমি দৈনন্দিন জীবনে যেভাবে দারিদ্র্যের সাথে সংগ্রাম করে বেঁচে আছি, তেমনি দাবা বোর্ডেও সে লড়াইটাই উপভোগ করতে চেষ্টা করি। দাবা খেলা আমার প্রতিদিনকার জীবনের নানা সমস্যা ও দুর্ভোগ কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করে। আমি নওদাপাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীতে লেখাপড়া করি।
আমি ২০১৭ সালে জাতীয় অনূর্ধ্ব-১০ বালিকা দাবা প্রতিযোগিতায় এবং ২০১৯ সালে অনূর্ধ্ব -১২ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। এই বছর জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৬ বালিকা দাবা প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আমি মালদ্বীপে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান ইয়ুথ চ্যাম্পিয়নশীপে খেলতে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ইয়ুথ চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। পাশাপাশি ভবিষ্যতে ভালো গ্ৰান্ডমাস্টার হতে চাই।
তিনি আরও জানান, আমার বাবার নওদাপাড়া খানকা শরীফ মোড়ে মোটর পার্সের দোকান আছে। আমি তিন বোনের মধ্যে ছোট। তার পক্ষে আমার খেলাধুলার খরচ চালানো সম্ভব নয়। আমার ভালো দাবা খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্ন পূরণে সহযোগিতা করার জন্য জেলা প্রশাসকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর