ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘যেকোনো মূল্যে জলাবদ্ধতা নিরসন করে জনগণের ভোগান্তি দূর করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর জন্য প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হব।
তিনি বলেন, ‘কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়ার মাত্র ৮০ মিটার ড্রেনের কাজ সম্পন্ন করতে না পারায় এই অঞ্চলে জলাবদ্ধতা বেড়ে গেছে এবং তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে এই এলাকার জনগণের দুর্ভোগ এখন চরম পর্যায়ে। জনগণের ভোগান্তি দূর করতে প্রয়োজনে আমি নিজে আদালতে যাব। জনগণের ভোগান্তির বিষয়টি মহামান্য আদালতে উপস্থাপন করে এর দ্রুত সমাধানে ব্যবস্থা নেব।’
আজ কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়া এলাকায় ওয়াসা থেকে প্রাপ্ত ড্রেনেজ অংশ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার স্থান সরেজমিনে পরিদর্শনকালে মেয়র এসব কথা বলেন তিনি।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়ার এই ড্রেনেজ অংশ ওয়াসা থেকে ডিএনসিসির নিকট হস্তান্তর করা হয় এবং সেই সময়ই ওয়াসা কাজ সমাপ্ত না করেই বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে সিটি করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে ড্রেনের কাজ শুরু হয়। ডিএনসিসি কাজ শুরু করলে আগে ওয়াসা থেকে প্রাপ্ত কাজটির ঠিকাদার মামলা দায়ের করায় আদালত সেখানে স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। এর ফলে ওই অংশে ডিএনসিসির ড্রেনের উন্নয়ন কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
পরিদর্শন শেষে মেয়র উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি আজকে এখানে এসে দেখলাম আগে যারা কাজ করে গেছেন তারা ড্রেনের ভেতরে তাদের ব্যবহৃত পাইপ, সেন্টারিংয়ের জিনিসপত্র, বালির বস্তা, কাঠসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ফেলে রেখে চলে গেছেন। এগুলোও তারা পরিষ্কার করেননি। এর ফলে ড্রেনগুলোতে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ সম্মিলিতভাবে কাজ করে এই ড্রেনগুলো পরিষ্কার করছে।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের দুর্ভোগ দূর করতে এখানে চারবার এসেছি। এর আগেও মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এবং ওয়াসার সাথে একাধিকবার কথা হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়ার এই অংশের সমস্যা সমাধানে গুরুত্বসহকারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই এলাকাসহ ডিএনসিসির অন্যান্য এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে একটি কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। যেকোনো স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে কুইক রেসপন্স টিম তাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসহ সেখানে উপস্থিত হয়ে দ্রুত পানি অপসারণ করে জলাবদ্ধতা নিরসন করবে। ১৬১০৬ এই হটলাইন নম্বরে যেকোনো অপারেটর (গ্রামীণ ফোন ব্যতীত) থেকে ফোন করে জলাবদ্ধতার বিষয়ে তথ্য জানানো যাবে।’
কতদিনের মধ্যে এই ড্রেনের কাজ সম্পন্ন হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘ডিএনসিসি এখানে কাজের সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। ইতোমধ্যে পাইপ ও অন্যান্য সরঞ্জাম চলে এসেছে। অর্থের বরাদ্দও দেওয়া আছে। আদালতের স্থগিতাদেশ উঠে গেলে মাত্র ৪ দিনে এই কাজটুকু সম্পন্ন করা সম্ভব।’
মেয়র বলেন, ‘তালতলা থেকে মিরপুর ১০ পর্যন্ত পুরো সাড়ে ৪ কিলোমিটার ড্রেনের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে মাঝখানে কাজীপাড়ার শুধু এই অংশের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এই এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। আমি আশা করি, আদালত জনগণের দুর্ভোগ লাগবে দ্রুতই এটির একটি সুষ্ঠু সমাধান দেবেন।’
এসময় ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইসমাইল মোল্লা ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. হুমায়ুন রশীদ (জনি), প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, এবং ডিএনসিসির অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ