রাজশাহীতে আলোচিত অধ্যক্ষকে নিয়ে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর সংবাদ সম্মেলনের ঘটনায় পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড়ে নিজস্ব রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এই নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, অধ্যক্ষকে পিটিয়েছেন এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। যার তথ্য-প্রমাণ তার কাছে আছে। এখন এমপির ভয়ে অধ্যক্ষ মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন।
আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘রাজাবাড়ী হাট ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষকে মারধরের বিষয়ে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর মিথ্যাচারের জবাব প্রমাণসহ তুলে ধরতে আমার সংবাদ সম্মেলন।’ তিনি বলেন, ২০২০ সালে ফারুক চৌধুরীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত শুরু করেন। অর্থ আত্মসাৎ, খাসজমি ইজারায় দুর্নীতি, সার ডিলার নিয়োগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি ও জামায়াত-বিএনপির লোকদের নিয়োগ দেওয়াসহ ২০ ধরনের অনিয়ম পায় দুদক।
রাজাবাড়ী হাট ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ছাড়াও অনেককে ওমর ফারুক নির্যাতন করেছেন উল্লেখ করে আসাদ বলেন, ‘একইভাবে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে তানোরের এলজিইডি প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এমপি ওমর ফারুক। ২০১৮ সালের ১২ আগস্ট জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সহ-সভাপতি কাজী রুবেল রানাকে জুতা পেটা করে পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেয়। একই বছরে তানোর উপজেলা ছাত্রলীগের তৎকালীণ সভাপতি রবিন সরকারকে জুতা পেটা করে এমপি নিজেই। তার আগে ২০১৩ সালে তানোর আবদুল করিম সরকার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমানকেও বাড়িতে ডেকে নির্যাতন করেছেন তিনি। ওই বছর তানোর উপজেলার পিআইও জিয়াকে লাঞ্ছিত করেন এমপি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী রাজাবাড়ী হাট ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে মারধর করেছেন বলে বুধবার (১৩ জুলাই) খবর ছড়িয়ে পড়ে। খবরটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয়। সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষকে মারধরের ঘটনা সত্য নয় বলে দাবি করেন এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। একই সঙ্গে খবরটি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ চক্রান্ত করে তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করেছেন বলেও দাবি এমপির। ওই সংবাদ সম্মেলনে এমপির পাশে বসে মারধরের শিকার হননি বলে দাবি করেছেন অধ্যক্ষ সেলিম রেজাও। এরপরই শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে নিজের পক্ষে সাফাই গাইলেন আসাদ।
এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, আসাদের এটি পুরানো স্বভাব। রাজশাহীর প্রতিটি সংসদীয় আসনে দলীয় নেতাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে রাখতে তিনি ভূমিকা রাখছেন। এখনও তিনি সেই কাজটি করছেন। অধ্যক্ষকে নিয়ে তিনি যে মিথ্যাচার করেছেন, তা নিয়ে তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে লিখিতভাবে জানাবেন বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল