তিন দশকের এমন আবহাওয়া দেখেনি রংপুরের মানুষ। প্রচন্ড গরম এবং বিরুপ আবহাওয়ার কারণে মানুষের রোগবাইলও বেড়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। বিশেষ করে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ও শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে এটা স্বাভাবিক।
রবিবার দুপুরে রমেক হাসপাতালে গিয়ে জানা গেছে, এক হাজার শয্যার এই হাসপাতালে বর্তমানে বিভিন্ন ওয়ার্ডে এক হাজার ৫২০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া হাসপাতালের বহির্বিভাগেও অত্যাধিক রোগী দেখা গেছে। মায়েরা শিশুদের নিয়ে হাসপাতালের আউটডোরে ভিড় করছেন। হাসপাতালের হৃদরোগের দুইটি ওয়ার্ডে ৪৩ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া স্ট্রোকসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত প্রায় ৩’শ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মেডিসিন বিভাগে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ জন রোগী মারা গেছেন। এর মধ্যে স্ট্রোক জনিত সমস্যার কারণে পঞ্চগড়ের অধির চন্দ্র, ঠাকুরগাওয়ের কুলসুম বেগম, একই জেলার রেজাউল করিম, বদরগঞ্জের ফরিদ হোসেন, দিনাজপুরের মোফাজ্জাল হোসেন, হাতিবান্ধার দিশা রানী মারা গেছেন। বাকিরা হৃদরোগসহ অন্যান্য রোগে মারা গেছেন।
রংপুর নগরীর অদূরে নজিরের হাট এলাকার নুর জাহান বেগম প্রচন্ড গরমের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। স্বামী এবং ছেলে নেই। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। বাড়িতে একা থাকেন। গরমজনিত কারণে মারাত্মক অসুস্থ হলে তার মেয়ে অনামিকা মায়ের চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। অনামিকা বলেন, প্রচন্ড গরমে মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়া গরমে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ১৫ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসাপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ধারণ ক্ষমতার বেশি রোগী রয়েছে। গরমে শিশুরা সর্দি, কাশি, জ্বরসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. মোস্তফা জামান বলেন, ঈদ পরবর্তী রোগীর সংখ্যা বাড়লেও এটি অস্বাভাবিক নয়। গরমজনিত কারণে রোগী বেড়েছে, তবে তা স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে। তিনি গরমে মানুষজনকে বেশি করে পানি পান ও নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শ দেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল