রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় সালিশের নামে এক ব্যক্তিকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে ঘোরানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মামলা করলে পুলিশ শনিবার প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। রবিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের ধুমগাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ, স্থানীয় ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ভ্টুু মিয়া পেশায় একজন বাবুর্চি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়, রাতে পুত্রবধূর ঘরে প্রবেশ করেছেন তিনি। এই অভিযোগ তুলে গত শুক্রবার সালিশ ডাকা হয়। মসজিদ কমিটির নামে এলাকায় লিফলেট বিতরণ করা হয় এবং সামাজিকভাবে তাকে একঘরে করার ঘোষণা দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তাকে গলায় জুতার মালা দিয়ে ঘোরানো হয়।
স্থানীয়রা জানান, এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালিয়ে শুক্রবার বিকেলে ধুমগাড়া জামে মসজিদের সামনে একটি খোলা মাঠে গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে মসজিদ কমিটির সদস্যরা সালিশ বসান। সেখানে প্রভাবশালী মনির হোসেন তাকে জোর করে জুতার মালা গলায় পরিয়ে গ্রামে ঘোরান। স্থানীয় আরেক প্রভাবশালী আব্দুর রউফ সালিশে নেতৃত্ব দেন। এসময় উত্তেজনা দেখা দিলে পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মসজিদ কমিটির আব্দুর রউফ বলেন, স্থানীয় ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিশ বসেছিল। তিনি জুতা পরানোর নির্দেশ দেননি।
ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তির পুত্রবধূ বলেন, ওই দিন রাতের অন্ধকারে কেউ একজন তার ঘরে ঢুকেছিলেন। ওই সময় তার স্বামী ঘরে ছিলেন না। হঠাৎ ঘরে অন্য কাউকে দেখে তিনি চিৎকার দিলে ওই লোক পালিয়ে যায়।
এদিকে স্থানীয় কয়েজন জানান, মনিরের সাথে টাকা-পয়সা নিয়ে বিরোধের জের ধরে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সালিশের নামে নির্যাতন করা হয়েছে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হারাগাছ থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, শনিবার ভুক্তভোগীর পরিবার দুজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করলে ওই রাতেই প্রধান অভিযুক্ত মনির হোসেনকে গ্রেফতার করে রবিবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পুত্রবধূর ঘরে ঢোকার বিষয়টি প্রাথমিক তদন্তে মিথ্যা বলে জানা গেছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই