২৭ নভেম্বর, ২০২২ ২১:৩৭

‘দেশের উন্নয়নকে স্তব্ধ করতে চক্রান্ত করছে বিএনপি’

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

‘দেশের উন্নয়নকে স্তব্ধ করতে চক্রান্ত করছে বিএনপি’

বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, বাংলাদেশে যখন উন্নয়ন দৃশ্যমান, দেশ দ্রুত উন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছে, সেই সময় দেশের উন্নয়নকে স্তব্ধ করার জন্য চক্রান্ত করছে বিএনপি। যারা বলছে, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে, ডলার নেই, বাংলাদেশের আমদানি করার মতো অর্থ নেই, তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে।

বিএনপির অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে শাহ মখদুম থানা আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নগরীর বিমান চত্বরে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি নওদাপাড়া বাজারে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিল, আছে, আগামীতেও থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়ন দিচ্ছেন, আরো দেবেন, আরো কাজ বাকি আছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত কাজ একটা একটা করে সমাপ্ত করছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কারাগারে ছিলেন। নেত্রী শেখ হাসিনার দয়ায় তাকে বাসভবনে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তিনি নড়তে পারেন না, চড়তে পারেন না, একজন অসুস্থ মানুষ। বিএনপির ঘোষণা অনুযায়ী তিনি ১১ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশ চালাবেন, এটি কি বিশ্বাসযোগ্য? তার সন্তান লন্ডনে বসে আছে। মানি লন্ডারিং কেসে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। আর খালেদা জিয়া এতিমের অর্থ আত্মসাৎ মামলার আসামি। দুইজনই ইতিমধ্যে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষিত হয়ে গেছেন। তারা এসে বাংলাদেশে কি নির্বাচন করবেন, কীভাবে ক্ষমতা নেবেন, এটি আমাদের বোধগম্য নয়।

সমাবেশে খায়রুজ্জামান লিটন আরও বলেন, আমরা দেখছি, তাদের নেতৃবৃন্দ পলিসি নিয়েছেন, দুইদিন বা তিনদিন আগে সমাবেশের মাঠে গিয়ে পিকনিক করার মতো সবাই এক জায়গায় জমায়েত বসিয়ে কোথাও হাড়িতে রান্না হচ্ছে, কোথাও গান-বাজনা হচ্ছে, কোথাও গল্প-আড্ডা হচ্ছে। এই যদি আপনাদের (বিএনপির) রাজনীতি হয়, ওই রাজনীতি আপনারা করতে থাকেন। ইনশাল্লাহ আমাদের পশমও ছিঁড়তে পারবেন না।

বিএনপির সমাবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপি চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, জয়পুরহাট, বগুড়া, রাজশাহী জেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে কয়টা লোক আনতে পারে, কয় লাখ লোক আনতে পারে সেটা আমরাও দেখতে চাই। কারণ অতীতেও আমরা দেখেছি, মাদ্রাসা মাঠের ওই রাস্তাটায় তারা ঠিকমতো ভরাট করতে পারে না।

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, এই বাংলাদেশে বসবাস করে মির্জা ফখরুলরা তাদের লোকদের মাধ্যমে লন্ডনে, মালয়েশিয়া, সৌদে আরবে আমাদের প্রবাসী ভাইদের, যারা রেমিট্যান্স পাঠান ব্যাংকিং চ্যানেলে, সরকারের আয় হতো, তারা তাদের উসকানি দিয়ে বলেছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে দিলে কম টাকা পাওয়া যাচ্ছে, ডলারে ৭/৮ টাকা বেশি পাওয়া যাবে হুন্ডি করে টাকা পাঠালে। তারা কি দেশপ্রেমিক হতে পারে? তারা দেশের ক্ষতি করছে, প্রবাসী শ্রমিক ভাইদের প্ররোচিত করছে।

মেয়র আরও বলেন, এখন সুখের বিষয় চলতি মাসে রেমিট্যান্স ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। গত ২৫ নভেম্বর বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান সাহেব বলেছেন বাংলাদেশে কখনো দুর্ভিক্ষ হবে না। শেখ হাসিনার বাংলাদেশে, আওয়ামী লীগের বাংলাদেশে আর কোনোদিন দুর্ভিক্ষ হবে না। এই বাংলাদেশের মানুষ যে পরিমাণ শস্য ফলায়, এই ফলন আরো বাড়ছে। কারণ শেখ হাসিনা সরকার নিরলসভাবে গবেষণা করে কীভাবে উৎপাদন বাড়ানো যায়, সেই কাজটি করছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি বলছে, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাব না। নির্বাচন হতে দেব না।’ এটি বিএনপি ও তাদের সঙ্গে যারা আছে তাদের কথা। দেশটা কি বিএনপি-জামায়াতের বাপ-দাদার তালুক? যে তাদের কথায় চলবে? সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। উচ্চতর আদালত থেকে রায় এসেছে যে, আর কেয়ারটেকার সরকারের দরকার নেই। উন্নত বিশ্বে ভারত, ইংল্যান্ড ইত্যাদি দেশে ক্ষমতাসীন সরকার বহাল থেকে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সেইভাবে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে আমরা তাদের আসবার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। তাদের সব কথাতেই না। ২০১৪ সাল থেকে শুরু হয়েছে এই না বলা। সেই না না এখনো চলছে। ওই না’য়ে বাংলাদেশ থেমে নেই। বাংলাদেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে।

শাহ মখদুম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আখতারুল আলমের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ডাবলু সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু। সঞ্চালনা করেন শাহ মখদুম থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহাদত হোসেন শাহু।

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসলাম সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফিরোজ কবির সেন্টু, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোহেল, রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর