রংপুরের বাণিজ্যিক মার্কেট ও মেগামলগুলোর একটিতেও নেই যথাযথ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। ফলে মার্কেটগুলোর কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির পাশাপাশি অসংখ্য মানুষও রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে। মার্কেট ও ভবন মালিকরা আইন মেনে ভবন তৈরি না করায় এমন ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সূত্র জানায়, ‘অগ্নি প্রতিরোধ ও অগ্নি হইতে উদ্ধার আইন’ অনুসারে এসব বহুতল ভবন ও মার্কেটে নিজস্ব স্থায়ী অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, নিজস্ব পাম্প, রাইডার, গ্যাস মাস্কসহ কয়েকরকম ডিটেক্টর, আলাদা বহির্গমন পথ, ভবনের উপরে ও নিচে সংরক্ষিত পানির ব্যবস্থা, ফায়ার এক্সটিংগুইশারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা হয়নি। কোথাও কোথাও লোক দেখানো দু’একটি ফায়ার এক্সটিংগুইশার ঝোলানো থাকলেও এসবের কোন কোনটি মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ বারবার তাগদা দিয়ে চিঠি দিলেও ভবন ও মার্কেটের কমিটির পক্ষ থেকে কোন সাড়া মিলছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রংপুর ঝুকিপূর্ণ মার্কেটগুলো হচ্ছে নবাবগঞ্জ বাজার, ছালেক মার্কেট, সুপার মার্কেট,নিউ মার্কেট, মোতাহার কমপ্লেক্স, মিনি মার্কেট, কালেক্টরেট সপিং কমপ্লেক্স মার্কেট, এরশাদ হর্কাস মার্কেট, জাহাজকোম্পনি মার্কেট, জামাল মার্কেট, জেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টার মার্কেট, সিটি বাজার, সিটিপার্ক মার্কেটসহ, সাত মাথা, টার্মিনাল, মর্ডান মোড়ে আরও একধিক মার্কেট মারাত্মক অগ্নি ঝুকিতে রয়েছ।এছাড়া বহুতল ভবনের মধ্যে নর্থ ভিউ, ক্যাসপিয়া, গোল্ডেন টাওয়ার, শাহ আমানতসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠানের ভবনের নামও রয়েছে বলে জানা গেছে। এসব ভবনের কোটি কোটি টাকার সম্পদ ও মানুষের জীবন রয়েছে অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে। একই রকম অবস্থা জেলার প্রায় ৩শ’ মার্কেট ও বাণিজ্যিক ভবন এবং বিভিন্ন বাজার বিপনী বিতানের। এসব ভবনে সবসময় লোকজনের ভিড় থাকলেও অগ্নিনির্বাপণে যথাযথ কোন ব্যবস্থা নেই।
জানাগেছে, মার্কেট ও ভবনগুলোতে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা তৈরী করতে বারবার তাগাদা সত্ত্বেও ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষের কথা শুনছে না ভবন ও মার্কেট কর্তৃপক্ষ। রংপুর জেলায় অন্তত শতাধিক বহুতল ভবন রয়েছে, যেগুলো অগ্নি আইন না মেনে নিজেদের খেয়াল খুশিমতো তৈরী করা হয়েছে। সিটি করপোরেশন থেকে ভবনের নকশা ফায়ার সার্ভিসে কাছে জমা দিয়ে ভবন মালিকরা অঙ্গিকার করে যথযথ অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা রেখে ভবন কিংবা মার্কেট নির্মাণ করবেন। কিন্ত যথযথ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা খরচ হয়। টাকা খরচের ভয়ে ভবন ও মার্কেট মালিকরা নিয়ম মানছেন না।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রংপুরের উপ পরিচালক আব্দুল হামিদ বলেন, আমরা ঝুকিপূর্ণ ভবন ও মার্কেটি নিয়মিত পরিদর্শন করে পরামর্শ দিচ্ছি। কিন্তু অনেকেই আমাদের পরামর্শ শুনছেন না।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল