রংপুরের পীরগাছার আলাইকুমারী নদীটি হারিয়ে যেতে বসেছিল। দীর্ঘদিন থেকে স্থানীয় মানুষ ও নদী নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠন দাবি করে আসছিল নদীটি সংস্কারের। সম্প্রতি সংস্কার করায় নদীটি প্রাণের ছোঁয়া পেতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, প্রায় ২৫ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ আলাইকুমারী নদী পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের বড় হাজরা এলাকা থেকে প্রবাহিত হয়ে রংপুর পাওটানা রাস্তার বড় দরগা বাজার, মন্তার বাজার, সুন্দর বাজার ও দামুর চাকলা বাজার অতিক্রম করে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে পীরগাছা সদর ইউনিয়নে ঘাঘট নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। এক সময় এ নদী ঘিরে দুই পাড়ের মানুষের মাঝে প্রাণ চাঞ্চল্য ছিল। সময়ের বিবর্তনে ও জলবায়ুর পরিবর্তনে বিভিন্ন স্থানে নদী শুকিয়ে পলি জমে যাওয়া, নদীতে ফসলের চাষসহ বিভিন্ন স্থানে দখলের কারণে এ নদীটির অস্তিত্ব প্রায় বিপন্ন হতে চলেছিল।
সম্প্রতি বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) ভূ-উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহার ও বৃষ্টির পানির সংরক্ষণের মাধ্যমে বৃহত্তর রংপুর জেলায় সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় আলাইকুমারী নদীকে সংস্কারের তথা খননের উদ্যোগ নেয়। প্রকল্পের এ অংশে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ আলাইকুমারী নদীর পুনঃখনন করা হচ্ছে।
প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এবং রংপুর সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান খান জানান, এ নদীটি পুনঃখননের কাজ জুন মাসে শেষ হবে। সংস্কারের ফলে ফলে ভূ-উপরিস্থ পানির ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এ পানি কৃষকরা পাশের জমিতে সেচ কাজে ব্যবহার করবে, ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার হ্রাস পাবে পাশাপাশি জলাবদ্ধতা নিরসনসহ নদী পাড়ে বিভিন্ন ধরনের ফলজ বনজ গাছসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ করে এলাকার মানুষ জীববৈচিত্র্য রক্ষার পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারবে।
নদী পাড়ের বাসিন্দা নুরুন্নবীসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, নদীটির সংস্কারের ফলে এখানে এখানে জীববৈচিত্র্যে প্রাণের স্পন্দন আসবে। মৎস্যজীবীরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে।
নদী বিশেষজ্ঞ ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান, একটি নদী এলাকার উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখতে পারে। আমাদের দেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করতে হলে আমাদের নদীগুলোকে আবার জাগাতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই