ঘূর্ণিঝড় মোখার কোনো প্রভাব নেই রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে। খটখটে রোদের সাথে দাবদাহ এবং লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তীব্র দাবদাহের কারণে ভাইরাসজনিত জ্বর, সর্দি, কাশি দেখা দিয়েছে ঘরে ঘরে। এছাড়া বিদ্যুতের নাজুক অবস্থার কারণে নাকাল হয়ে পড়েছেন এই অঞ্চলের মানুষ। বেড়ে গেছে হাতপাখার কদর। আবহাওয়া অফিস বলছে, দুই একদিনের মধ্যে রংপুরে বৃষ্টির সম্ভবনা নেই।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রংপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কোথাও কোন মেঘের ছিটেফোটা নেই। প্রচণ্ড গরমে গত কয়েকদিন ধরে শ্রমজীবী মানুষ মাঠে কাজ করতে হিমসিম খাচ্ছেন। এতে ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে রোগ-বালাই। গত কয়েকদিন ধরে রংপুরে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। এ কারণে প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে।
রংপুর নগীর শাহী পাড়ার রবিউল ইসলামসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হবে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় প্রচণ্ড রোদে খাঁ খাঁ করছে চারদিক। রংপুর শহরে দুপুরবেলা ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত রিকশাচালকদের লাইন ধরে গাছতলায় বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে।
কষ্টের সাথে রিকশাচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রচণ্ড রোদের কারণে রিকশায় কেউ উঠছে না। তাই আয় নেই। অপরদিকে চিকিৎসকরা বলছেন, এমন আবহওয়ায় হিটস্ট্রোক, চর্মরোগসহ শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
বিদ্যুতের লোডশেডিংসহ গরমকে ঘিরে রংপুর শহরের ফুটপাতগুলোতে তালপাখাসহ বাঁশ, কাপড় ও সূতার তৈরি বিভিন্ন ধরণের হাতপাখার পসরা সাজিয়ে বসেছে ব্যবসায়ীরা। ১০ টাকার হাতপাখা বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৫০ টাকায়।
কয়েক দিন ধরে হঠাৎ তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় চরম বেকায়দায় পড়েছেন লোকজন। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে বোরো ধান মাঠে রয়েছে। খরতাপে ধানের ক্ষতির শঙ্কা করছেন কৃষকরা। প্রখর রোদ আর গরমের কারণে কৃষকের ক্ষেতে পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব।
এদিকে রমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রচণ্ড গরমে শরীর থেকে ঘাম ঝড়ে মানুষ দুর্বল হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ৬০ বছরের বেশি এবং ৫ বছরের কম বয়সের শিশুদের ঝুঁকি বাড়ছে।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাাফিজার রহমান বলেন, রবিবার দুপুর ৩ টায় রংপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলমিয়াস। ১৬ মে’র আগে এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা নেই।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ