পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের পরিদর্শিকা (প্রশিক্ষণার্থী) নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগীদের পক্ষে বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের অবহিত করে আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন।
শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনাতয়নে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ড. সুফি সাগর সামস বলেন, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের পরিদর্শিকা (প্রশিক্ষণার্থী) নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে ৯৭২ জন চাকরি প্রত্যাশিকে অতিরিক্ত নম্বর প্রদান করে উত্তীর্ণ করিয়ে খান মো. রেজাউল করিম পরিচালক (প্রশাসন) এর নেতৃত্বে প্রশাসন ইউনিটের সিন্ডিকেট। এক্ষেত্রে তারা লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্ন উত্তর পদ্ধতি পরিবর্তন করে অবৈধভাবে চুক্তিবদ্ধ চাকরি প্রত্যাশীদের পাস করানোর জন্য টিক চিহ্ন পদ্ধতি চালু করে। এই অপকর্ম সম্পন্ন করতে চাকরি প্রত্যাশী প্রতি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে গত ১৩ এপ্রিল ২০২৩ বেশকিছু গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ৯৭২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি চাকরি প্রত্যাশীর পরীক্ষার খাতায় টাকার বিনিময়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের মাধ্যমে টিক মার্ক দেয়া হয়েছে, যা বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হলে নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হবে।
তিনি বলেন, ৯৭২ জন চাকরি প্রত্যাশী পরীক্ষার্থীর রোল নম্বর পরীক্ষার ফলাফল সরকারিভাবে প্রকাশের ৮৪ দিন পূর্বে পাস দেখানো ফলাফলের কপি তাদের কাছে পাঠিয়ে দিয়ে টাকা নেয়া হয়। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এ সংক্রান্তে যে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, তাতে বর্ণিত আছে, পরিচালক (প্রশাসন), খান মো. রেজাউল করিম বলছেন, ‘এসব তদন্তে কিছু হবে না। টাকা ও ক্ষমতার কাছে সব নিষ্ফল। তদন্তে কোনো কিছু প্রমাণ হবে না’।
সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভপুর উপজেলার এক ভুক্তভোগী পরিক্ষার্থী লুৎফুন নাহার দাবি করে বলেন, আমার পরীক্ষা শতভাগ ভালো হয়েছে। একাধারে আমি পোষ্য কোঠা ও মুক্তিযোদ্ধা কোঠা থাকার পরেও চাকরি পাইনি। আমাদের সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভপুর উপজেলা সৈলাল দাস নামের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন।
এসময় এক ভুক্তভোগীর বাবা সুনামগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম আকন্দ বলেন, আমার মেয়ে ভালো পরীক্ষা দিয়েও চাকরি পেলেন না। এটা খুবই দুঃখের বিষয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রাখার পরেও এমন দুর্নীতি মেনে নেয়া যায় না।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তরা আরও বলেন, ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্টরা সাক্ষী দিতে রাজি হন না। এজন্য সরকারি কর্মকর্তাদের অনিয়মের অভিযোগ সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করতে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে তার পদ থেকে অপসারণ করে তদন্ত করা একান্ত আবশ্যক। অন্যথায়, সুষ্ঠু তদন্ত করা সম্ভব হয় না। এজন্য পরিচালক (প্রশাসন), খান রেজাউল করিমসহ তার অনৈতিক কাজের সঙ্গীয় সহযোগীদের তাদের পদ থেকে অপসারণ, প্রকাশিত ফলাফল স্থগিত ও ফের নিয়োগ পরীক্ষার খাতায় ‘টিক চিহ্ন’ পদ্ধতির স্থলে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে পরীক্ষা গ্রহণের দাবি জানান।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত