বরিশালে অবিরাম অতিভারী বৃষ্টিতে গৃহবন্দী অবস্থায় রয়েছেন জনসাধারণ। চলতি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি আর নদীর জোয়ারের পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে গেছে নগরীর রাস্তাঘাট-বাড়িঘরসহ বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে দিনমজুর শ্রেণির মানুষ পড়েছে অবর্ণনীয় দুর্দশায়। আগামী ২ দিন অতিভারী বৃষ্টিসহ ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস।
গত কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে বরিশাল। শনিবার থেকে বৃষ্টি হচ্ছে অবিরাম। কখনও মাঝারি আবার কখনও ভারী এবং অতিভারী বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। টানা বৃষ্টিতে অতি প্রয়োজন ছাড়া মানুষজন ঘর থেকে বের হচ্ছে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমায় উপস্থিতিও অন্য দিনের চেয়ে কম। নগরীর রাস্তাঘাটে কিছু রিকশা ও থ্রি হুইলার চলাচল করলেও রাস্তাগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ড্রেনের নোংরা পানিতে একাকার হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির কারণে বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর শ্রেণির মানুষ।
একদিকে ভারী বৃষ্টির পানি, অন্যদিকে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নগরীতে জলাবদ্ধতায় নাকাল সাধারণ মানুষ। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় মানুষজনের চলাচলে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। পায়ে হেঁটে যারা গন্তব্য যাচ্ছেন, তাদের বিভিন্ন সড়কে হাঁটুপানি ভেঙে কাপড় ভিজিয়ে চলতে হচ্ছে।
রাস্তাঘাটে পানি জমে যাওয়া এবং বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে যাওয়ায় সিটি করপোরেশনকে দুষছেন ভুক্তভোগীরা। তাদের দাবি, সিটি করপোরেশন ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখলে বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে যেত। জনদুর্ভোগ হতো না। তারা ড্রেনগুলোর পয়ঃনিষ্কাশন সক্রিয় করার দাবি জানিয়েছেন।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মাসুদ রানা রুবেল জানান, সোমবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় বরিশালে ১৪১.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ১০৬ মিলিমিটার।
তিনি আরও জানান, মৌসুমী বায়ু সক্রিয়। বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এ কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশ এলাকায় এবং সমুদ্র বন্দরের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত এবং নদী বন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে অতিভারী বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় বরিশাল অঞ্চলে ভারী এবং অতিভারী বৃষ্টিসহ ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই