বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসায় নিরলস সেবা দিয়ে যাচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। দেশের দুর্যোগের সময়ে সেবা দিয়ে স্বাস্থ্যসেবায় ভরসার জায়গা হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছে হাসপাতালটি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই হাজার ৮শ' আহত রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছে ঢামেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এদের মাঝে প্রায় ৯শ' জনকে ভর্তি থাকতে হয়েছে এই হাসপাতালেই। আন্দোলনের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও, এখনো ২০ জন আহত রোগী ভর্তি রয়েছেন। ২ হাজার ৬শ' বেডের এই হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ৪ হাজারের বেশি রোগী ভর্তি থাকে। বহিঃবিভাগ ও জরুরি বিভাগে প্রায় প্রতিদিন ৫ হাজার রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। হাসপাতালে রয়েছে ৫১টি অপারেশন থিয়েটার। হাসপাতালের পুরাতন নতুন মিলে তিনটি ভবন মিলে রয়েছে ১০০ এর বেশি ওয়ার্ড।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, অধিকাংশ রোগীই বহু হাসপাতাল ঘুরে শেষ ভরসার জায়গা হিসেবে এ হাসপাতালে আসেন। সংকটাপন্ন এসব রোগীদের থাকে বিভিন্ন রকমের জটিলতা। হাসপাতালে বিছানা খালি না থাকলেও জটিল রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়ার অভ্যাস ঢাকা মেডিকেলে নেই। কারণ এখান থেকে ফেরত গেলে ঐ রোগীর ভাগ্যে অন্য কোন সরকারি মেডিকেলে বিছানা পাওয়া কঠিন।
তিনি আরো বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এ সময়ে আহত মানুষের চিকিৎসায় যে সকল চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বা এখনও আছেন তাদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা।
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিয়েছিল বেশ কিছু বিশেষ উদ্যোগ। এর মধ্যে রয়েছে, জরুরি বিভাগে দ্রুত চিকিৎসা শেষ করেই আহতদের নেয়া হতো বিশেষায়িত ওয়ার্ডে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে সব রকমের স্বাস্থ্যসেবা। সেবার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি রোগীদের সাথে ভালো ব্যবহার নিশ্চিত করতে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
হাসপাতালের উপ-পরিচালক মো. আশরাফুল আলম বলেন, 'চিকিৎসক, নার্সদের সেবার পাশাপাশি হাসপাতাল ব্যবস্থাপনাতেও কিছুটা দক্ষতা থাকা জরুরি। রোগীদের সাথে ভালো ব্যবহার সেবায় গুণগত পরিবর্তন দরকার। রোগীদের সালাম দিলে আর একটু হাসিমুখে কথা বললেই স্বাস্থ্যকর্মীদের সাথে সম্পর্কটা অনেক সহজ হয়। এই ব্যাপারে আমরা আইএমবি এবং পিডিসিএ মডেল ব্যবহার করছি।'
বিডি প্রতিদিন/মুসা