জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও ডেল্টা প্ল্যানকে কার্যকর করতে দেশব্যাপী পৌরসভাগুলোকে পরিবেশবান্ধব করা প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন বক্তারা। তারা বলেন, বাংলাদেশে নগর উন্নয়নকে পরিবেশবান্ধব সমাধানের মাধ্যমে এগিয়ে নিতে হবে।
গতকাল রবিবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আরবান ডেমোনস্ট্রেটর্স (ইউডি) আয়োজিত দিনব্যাপী ‘পিয়ার লার্নিং’ সেশনে বক্তারা এসব কথা বলেন। নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি ‘পার্টনার্স ফর ওয়াটার’-এর সহায়তায় অ্যালটেক কনসালট্যান্ট লিমিটেড (এসিএল) এবং আইএইচই ডেলফ্ট ইনস্টিটিউট ফর ওয়াটার এডুকেশন আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন নেদারল্যান্ডসের দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
পিয়ার লার্নিং সেশনে টেকসই সমাধানের মাধ্যমে শহুরে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় ইউডির যে মূল লক্ষ্যগুলো রয়েছে সেসব তুলে ধরা হয় এবং প্রজেক্টের সফলতা ও প্রভাব নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়।
উল্লেখ্য, কেশবপুর ও রাউজান উপজেলায় ইউডি’র চলমান পাইলট প্রজেক্টের আওতায় এ পর্যন্ত বেশ কিছু জনসাধারণের ব্যবহার্য জায়গা পুনরুদ্ধার করা হয়েছে, যেগুলো নোংরা ও পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিলো। এছাড়া পানির আধার বৃদ্ধি, পরিষ্কার ও শীতলীকরণ এবং অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের কাজও করা হয়েছে এর আওতায়।
এই সেশনে ইউডি’র প্রতিনিধিরা জানান, পরবর্তী তিন বছরে এভাবে আরও ৮ থেকে ১০টি পৌরসভায় প্রকল্প বিস্তৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে, যার ফলে অন্তত ১০০টি পৌরসভা উপকৃত হবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান্ড্রে কার্সটেন্স পিয়ার লার্নিং সেশনের উদ্বোধন করেন। আরবান ডেমোনস্ট্রেটর্স-এর প্রজেক্ট লিড ও এসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি ডব্লিউ চৌধুরী এবং এসআইবিডিপি ২১০০-এর পরামর্শক মির্জা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ডেল্টা প্ল্যান ২১০০-এর উপর বিস্তারিত উপস্থাপনা করেন। অন্যান্য সম্মানিত অতিথিরা তাদের মূল্যবান মন্তব্য ও পরামর্শ প্রদান করেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেকচার, ল্যান্ডস্কেপস অ্যান্ড সেটেলমেন্টসের ডিরেক্টর জেনারেল কাজী খালিদ আশরাফ, রাষ্ট্রদূতকে ‘দ্য গ্রেট পদ্মা’ বইটি হস্তান্তর করেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান্ড্রে কার্সটেন্স বলেন, ‘বাংলাদেশের সব শহরে প্রাকৃতিক সমাধানের মাধ্যমে জলবায়ু সহনশীলতা এবং বাসযোগ্যতা উন্নত করার লক্ষ্য সফল হোক—এটাই আমার আশা। নেদারল্যান্ডস এবং বাংলাদেশের মধ্যে অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। নদী, উপকূলীয় এলাকা ও ডেল্টা ব্যবস্থাপনার জন্য প্রশিক্ষণ এবং গবেষণা ও উদ্ভাবনসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে আমাদের দেশের বিভিন্ন কোম্পানি ও জ্ঞানভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে সক্রিয়ভাবে জড়িত আছে এবং দুই দেশের মধ্যে এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। সবাই মিলেই দূরদর্শী এই বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০-এর পরিকল্পনা করা হয়েছিলো, যা নিরাপদ, স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ অর্জনের দিকে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় যে আরবান ডেমোনস্ট্রেটর্স জলবায়ু পরিবর্তন ও অপরিকল্পিত নগরায়নের কুপ্রভাব বন্ধে আশু পদক্ষেপ নেয়া জরুরি মনে করে। আশা করছি, তারা সে লক্ষ্যে এই চ্যালেঞ্জগুলো দ্রুত মোকাবেলায় বিকল্প পদ্ধতি খুঁজে বের করবে। এই উদ্যোগের অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত।’
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ