স্বাধীনতার পরে সংখ্যালঘুরা মায়ের কোলের মত আছেন মন্তব্য করে চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম বলেন, বর্তমানে একটি কঠিন অবস্থা চলছে। দেশকে অস্থিতিশীল করতে ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র বন্ধে জাতীয় ঐক্য করতে হবে। ক্ষমতা ও স্বার্থের নেশায় থাকলে চলবে না। বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই দরবার শরীফের অগ্রহায়নের বার্ষিক মাহফিলের শততম আয়োজনে ওলামা ও সুধী সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় চরমোনাই পীর হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বলেন, কেউ কেউ দেশে অরাজকতা সৃষ্টির জন্য আপনাদের ব্যবহার করছে, আপনারা সতর্ক থাকুন। সম্মেলনে আগত ওলামায়ে কিরাম ও জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে আগামীদিনে ঐক্যবদ্ধ স্বপ্নের স্বদেশ বিনির্মাণে একসাথে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
সম্মেলনে অংশ নেয়া গণঅধিকার পরিষদ সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, কোন রাজনৈতিক দলকে প্রাধান্য দিয়ে অন্যদেরকে অবজ্ঞা করা যাবে না। সকল দলের প্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে সকল কাজ করতে হবে। ছোট খাটো বিরোধের কারণে যাতে আমরা নতুন করে দেশ গড়ার সুযোগ থেকে যাতে বঞ্চিত না হই সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
এ সময় তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের “নেতা নয় নীতির পরিবর্তন চাই” স্লোগানকে বাস্তবায়ন করে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে নতুন কিছু করতে হবে বলে মন্তব্য করেন নূর।
বাংলাদেশ ফরায়েজী জামায়াতের আমির হাজী শরীয়তুল্লাহর উত্তরসূরী বাহাদূরপুরের পীর হাফেজ মাওলানা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান বলেন, চরমোনাই পীরের ইমামতিতে কাজ করতে আমরা একমত আছি। এজন্য যা যা করার তা করতে রাজি আছি। এদেশের আলেম ওলামা ৮৮ বা ৯৮ এর বন্যার পানিতে ভেসে আসেনি। সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন হাফেজ মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ আল ফরিদী বলেন, গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান আল্লাহর বড় নেয়ামত। ৯০ ভাগ মুসলমানের সংবিধানে মূলনীতি হবে কুফরী মতবাদ এটা মেনে নেয়া যায় না। ইসলাম মানুষের জান-মাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা দেয়।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী বলেন, ইসকন নামক সন্ত্রাসী সংগঠন দিয়ে দেশে গৃহযুদ্ধ লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে। চরমোনাই পীর ও আল্লামা মামুনুল হককে নিয়ে একসাথে বসেছি এবং হাতে হাত রেখে একত্রে পথ চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আবদুল বাসিত আজাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা হাফিজুর রহমান সিদ্দিক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ প্রমুখ।
ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা নেছার উদ্দীন, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী এবং মুফতী দেলোয়ার হোসাইন সাকীর যৌথ সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন কুড়িগ্রাম আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মাদ নূর বক্স, ইসলামী আন্দোলন কাতার কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা মাওলানা আব্দুল হালিম, মাগুরার শত্রুজিৎপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ওসমান গনী মুছাপুরী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র শাখা সভাপতি মাওলানা বজলুর রহমান খান, হালিশহর বাইতুল করীম মাদরাসার শাইখুল হাদীস মাওলানা কাসেম বাবুনগরী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ওমান কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মাওলানা মীর আহমেদ মীরু, নড়াইল জেলা ওলামা পরিষদ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ তাজুল ইসলাম, টিকাটুলি মসজিদের ইমাম ও খতীব মাওলানা মহিউদ্দিন আশরাফী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মালয়েশিয়া কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুফতী আমিরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ডা. মুহাম্মাদ শহিদুল ইসলাম, যুবনেতা ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুহাম্মদ মারুফ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইউনুছ ঢালী, ওলামা বরিশাল জেলা সভাপতি মাওলানা আবু জাফর সালেহ। আজ সকাল ১০ টায় মাহফিল মঞ্চে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের গণজমায়েত হবে। আগামী শনিবার সকালে আখেরী বয়ান ও মোনাজাতের মাধ্যমে মাহফিল শেষ হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ