পাচার হলে তাদের উদ্ধার, প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসনের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সচিবালয়ে গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এ ছাড়াও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী আইন, ২০১৪-এর খসড়া ভেটিং সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আর রেলওয়ে সম্পত্তি (অবৈধ দখল) আইন, ২০১৪-এর খসড়ায় কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা। তিনি বলেন, 'ভারত সরকার ইতিমধ্যে এ সমঝোতায় সই করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। আমাদের মন্ত্রিসভা বৈঠকেও এর অনুমোদন দেওয়া হলো। আজ থেকে ঢাকায় শুরু হওয়া দুই দেশের স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের চার দিনব্যাপী বৈঠকে এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে। এতে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু হিসেবে গণ্য করা হবে। সমঝোতার আওতায় মানব পাচার বন্ধে দুই দেশের মধ্যে তথ্যবিনিময় করা হবে।' সচিব জানান, বাংলাদেশ থেকে বিশেষ করে নারী ও শিশুরা বিভিন্ন দেশে পাচার হয়। সবচেয়ে বেশি পাচার হয় ভারতে। ভারত থেকেও পাচার হয়ে বাংলাদেশে আসে। এ ব্যাপারে উভয় দেশই সচেতন। বর্তমানে কিছু কার্যক্রম চলছে- যেমন দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফোকাল পয়েন্ট আছে। দুই দেশের মধ্যে একটি টাস্কফোর্সও পাচার ঠেকাতে কাজ করছে। মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বলেন, 'পাচারকারীদের বিরুদ্ধে যার যার দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানব পাচার বন্ধে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সহযোগিতা নেওয়া হবে।' সচিব জানান, ভিকটিমদের নিরাপত্তা দেওয়া, গোপনীয়তা রক্ষা করা, নিজ নিজ দেশের আইন অনুযায়ী কম সময়ে দেশে ফেরানো এবং সমাজে পুনর্বাসনের চেষ্টাই হচ্ছে এ সমঝোতা চুক্তির মূল উদ্দেশ্য। রেলওয়ে সম্পত্তি (অবৈধ দখল) আইন, ২০১৪-এর খসড়ার ওপর কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা আইনটির নাম 'রেলওয়ে সম্পত্তি (অবৈধ দখল) উদ্ধার, ২০১৪' করা যায় কি না, তা দেখতে বলেছে। বৈঠকসূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী রেলওয়ের দখল ও বেহাত হওয়া সব জমি উদ্ধারে নির্দিষ্ট করে একজন কর্মকর্তার ওপর দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কোথায় কোথায় জমি অবৈধ দখলে আছে, বেহাত হয়েছে, সেগুলোর একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্যও তিনি নির্দেশনা দেন। এদিকে মন্ত্রিসভা বৈঠক শুরুর আগে জাতীয় পার্টির মন্ত্রীদের নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যায়। দলটি থেকে মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া সদস্যরা পদত্যাগ করছেন, নাকি বৈঠকে উপস্থিত হচ্ছেন- এ নিয়ে আলোচনা ছিল অনেকের মুখে মুখে। একজন সিনিয়র মন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'মন্ত্রিপরিষদে থাকা জাতীয় পার্টির সব সদস্যই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।' আরেকজন মন্ত্রী বলেন, 'আমি জাতীয় পার্টির অন্তত দুজন মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। জবাবে তারা জানিয়েছেন, পদত্যাগের বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে আদৌ কোনো আলোচনা হয়নি। এটা নিছক গুঞ্জন।'