আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ দলীয় নেতা-কর্মীদের সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, বিদেশি মদদে অপশক্তি ফের চক্রান্ত শুরু করতে পারে। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অপশক্তির চক্রান্ত মোকাবিলা করার আহ্বান জানান। হানিফ গতকাল দুপুরে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে কাজী বশির মিলনায়তনে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে বক্তৃতা করছিলেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যত দিন জীবিত আছেন, যত দিন কর্মক্ষম আছেন, তত দিন পর্যন্ত তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে। তত দিন তিনিই থাকবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী।
কোনো অপশক্তির সাধ্য নেই যে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে। দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ ছাত্রলীগ সভাপতি বায়জিদ আহমেদ খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের পরিচালনায় বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, দক্ষিণ যুবলীগ সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের মধ্যে গোলাম সরোয়ার মামুন, গিয়াসউদ্দিন পলাশ, মিরাজ হোসেন, মামুনুর রশিদ শুভ্র, আনিসুর রহমান আনিস, শেখ আনিসুজ্জামান রানাসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতারা। সম্মেলন হলেও কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। ১২ মে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কমিটির সঙ্গে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ ও উত্তরের কমিটি ঘোষণা করা হবে। এদিকে আজ রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ঢাকা মহানগরী উত্তরের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাগরিকত্ব নিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের সমালোচনা করে হানিফ বলেন, তার মতো ব্যক্তিও নির্লজ্জ মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছেন। তিনি বললেন, তারেক জিয়া জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক। তারেক জিয়ার জন্ম হয়েছিল পাকিস্তানের করাচিতে। জন্মসূত্রে যদি নাগরিকত্ব হয় তাহলে তারেক জিয়া পাকিস্তানের নাগরিক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মির্জা ফখরুল সাহেব নিজে মিথ্যাচার করে অন্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলার অভিযোগ আনছেন এজন্য তার প্রতি জাতির ধিক্কার ছাড়া আর কিছুই করার নেই। তিনি বলেন, বিএনপি এখন মিডিয়ার কল্যাণে বেঁচে আছে। জনগণের কাছে যাওয়ার আর কোনো মুখ ও সাংগঠনিক শক্তি নেই। প্রতিদিন তারা সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে।সরকারের ওপর কোনো চাপ নেই দাবি করে তিনি বলেন, সরকার জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আছে, আগামী নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আবারও ক্ষমতায় আসবে। এই বাংলাদেশের জনগণ বেগম জিয়া ও তার দুর্নীতিবাজ পুত্রের নেতৃত্বে হত্যা-সন্ত্রাসের রাজনীতি দেখতে চায় না। তাই ২০১৮ সাল নয়, ২০২৪ সাল নয়, ২০২৯ সালের পরে তাদের ক্ষমতায় আসার জন্য ভাবনা করতে হবে।
ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশে হানিফ বলেন, যে আদর্শ নিয়ে, যে চেতনা নিয়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি; যে আদর্শ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু নিজের জীবন দিয়েছেন আজকে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রতি পদে পদে আমাদের বাধার সম্মুখীন হতে হয়। কারণ, আমাদের প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী শক্তি বসে আছে।