বৃহস্পতিবার, ১৭ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিপর্যয়ের কারণ খুঁজছে জাপা

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

বিপর্যয়ের কারণ খুঁজছে জাপা

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এস এম মুশফিকুর রহমান মাত্র ১ হাজার ৭২ ভোট পেয়েছেন। ফলাফলে চরম ভরাডুবি হয়েছে। ফল ঘোষণার পর থেকেই সারা দেশে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীর মাঝে এ নিয়ে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা বলছেন, রংপুর সিটি নির্বাচনে ১ লাখ ভোটের ব্যবধানে বিজয়-পরবর্তীতে গাইবান্ধা উপনির্বাচনেও  বিজয়ের পর এমন বিপর্যয় মেনে নেওয়া যায় না। জাতীয় পার্টির কর্মী হিসেবে পরিচয় দেওয়া যাচ্ছে না। এদিকে পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ ফল বিপর্যয়ের কারণ খুঁজে বের করতে গতকাল সকালেই তার বারিধারার বাসভবনে পার্টি মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তিনি খুলনা মহানগরী জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে দেন। পার্টির ভোট বিপর্যয়ের জন্য মহানগরী কমিটির ব্যর্থতাকে দায়ী করা হয়। জানতে চাইলে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ফল বিপর্যয়ের কারণ আমরা খুঁজে বের করে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে খুলনা মহানগরী কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পরে পার্টির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ঘোষণা করা হবে। জানা যায়, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মুশফিকের জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসের অভাব ছিল পার্টি নেতা-কর্মীদের মধ্যেই। তারা বলেছেন, খুলনায় এইচ এম এরশাদের একটা ভালো অবস্থান থাকলেও নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল করেছে দল। মুশফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

একসময় তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এজন্য দলের নেতা-কর্মীরা তাকে বর্জন করেছেন। ২০১৭ সালের ১৪ মার্চ মেয়র পদে মুশফিকুরকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন পার্টি চেয়ারম্যান। এতে সেই সময় ক্ষুব্ধ হয়ে দুই যুগের সম্পর্ক ছিন্ন করেন খুলনা মহানগরী জাতীয় পার্টির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য শেখ আবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম ও যুগ্মসম্পাদক অধ্যাপক গাউসুল আজমের নেতৃত্বে তিন শতাধিক নেতা-কর্মী। এ ছাড়া রংপুরে প্রচারণার জন্য যেভাবে সারা দেশের নেতা-কর্মী একযোগে কাজ করেছিলেন তা মুশফিকুর রহমানের ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। ১৯৯৩ সালে খুলনা সিটিতে প্রথম নির্বাচনে মেয়র পদে জাপা প্রার্থী এস এম এ রব ২০ হাজার ভোট পান। ২০১৩ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সমর্থিত শফিকুল ইসলাম মধু জামানত হারিয়েছিলেন। এবারের নির্বাচনেও চরম ভরাডুবি ঘটল। এতে দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা ইমেজ সংকটে পড়েছেন।

এর আগে দলের দুর্গ খ্যাত রংপুর সিটি নির্বাচনে লাখো ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছেন জাপার মেয়র প্রার্থী। গাইবান্ধা-১ আসনের উপনির্বাচনে জাপার প্রার্থী আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পরাজিত করে জয়ী হন। এতে উজ্জীবিত এরশাদ আগামীতে সব নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু গাজীপুর ও খুলনায় যোগ্য প্রার্থীর সংকট উপলব্ধি করেন। যে কারণে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী দেওয়া যায়নি। খুলনায় প্রার্থী দিতে চাননি এইচ এম এরশাদ। কিন্তু খুলনা বিভাগীয় নেতাদের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে হয়েছে। এর আগে কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জে মেয়র পদে প্রার্থী দিতে পারেনি জাপা। ২০১৫ সালে ঢাকার দুই সিটি (দক্ষিণ ও উত্তর) এবং চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে জাপা প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। তিন সিটিতে মেয়র পদে সব মিলিয়ে মোট ১৩ হাজার ভোট পেয়েছিলেন জাপা প্রার্থীরা

সর্বশেষ খবর