গতকাল ছিল বঙ্গাব্দ ১৪২৫-এর শেষ দিন। দিনের সূর্য অস্তমিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়েছে রাজধানীসহ সারা দেশ। নাচ, গান, আবৃত্তি, লাঠিখেলা, লোকগান, লোকজ মেলা, সরোদের পরিবেশনা ইত্যাদি নানা আয়োজনে চৈত্র সংক্রান্তির মধ্যদিয়ে পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
চ্যানেল আই ও সুরের ধারা : চ্যানেল আই ও সংগীত সংগঠন সুরের ধারার যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ‘লোক সুরে বাংলা বাংলা’ শিরোনামে চৈত্র সংক্রান্তি ১৪২৫। গতকাল সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনের উদ্বোধনীতে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য আখতারুজ্জামান, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা প্রমুখ। সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত পরিবেশিত হয় ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, মুর্শিদী, মারফতি, রবীন্দ্র, নজরুল, লোকজ ধারার গানসহ পঞ্চকবির গান।
শিল্পকলা একাডেমি : চৈত্র সংক্রান্তি উদযাপনে মনোমুগ্ধকর লাঠিখেলার আয়োজন করেছে শিল্পকলা একাডেমি। একাডেমির উন্মুক্ত স্থানে হওয়ার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ায় আয়োজনটি স্থানান্তরিত হয় সংগীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনের সামনে। লাঠিখেলার মনমাতানো নানা কসরত প্রদর্শন করে নড়াইলের বীরশেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ লাঠিখেলা দল। লাঠিয়ালদের হাতের নৈপুণ্যে ঘুর্ণিপাকের মতো ঘুরতে থাকে লাঠি। প্রতিপক্ষকে আক্রমণের সঙ্গে উপস্থাপিত হয় আত্মরক্ষার নৈপুণ্যময় কৌশল। গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান : বরাবরের মতো এবারও শিল্পকলা একাডেমিতে চৈত্র সংক্রান্তি উদ্যাপন করেছে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন। সন্ধ্যায় একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার হলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঢাক-ঢোল বাদনের সঙ্গে বাঁশির সুরের উৎসবমুখরতায় শুরু হয় অনুষ্ঠান। সেই সুরের সঙ্গী হয়ে অতিথিরা প্রবেশ করেন মিলনায়তনে। এরপর সবাই মিলে অংশ নেন মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বলনে। প্রদীপ প্রজ্বলন শেষে সবার মাঝে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া হয় মুড়ি-মুড়কি বিতরণের মাধমে। অনুষ্ঠানে সরোদ বাজিয়ে শোনান ওস্তাদ শাহাদাত হোসেন খান। পালাগান পরিবেশন করেন সাইদুল ইসলাম বয়াতি। পিপলস ইউনিভার্সিটি : শোভাযাত্রা, লোকজ মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে চৈত্র সংক্রান্তি উদযাপন করেছে দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর আসাদ এভিনিউয়ের ক্যাম্পাস। বেলুন ওড়ানোর মধ্যদিয়ে সকালে শুরু হয় দিনব্যাপী এ আয়োজন। এরপর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।বিশ^বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা নানা রঙের বৈশাখী পোশাক পরে তাদের স্টলগুলোতে নানা ধরনের খাদ্য ও বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন। সকাল থেকেই বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা আবৃত্তি-গানে মেতে ছিলেন।