বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

আড়াই বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি রংপুর বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

গত আড়াই বছরেও রংপুর মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়নি। মহানগরের ৩৩টি ওয়ার্ডেও কমিটি নেই। ফলে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন দলীয় কার্যালয়ের গলিতেই সীমাবদ্ধ হয়ে আছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আড়াই বছর আগে মোজাফফর হোসেনকে সভাপতি, শহীদুল ইসলাম মিজুকে সাধারণ সম্পাদক ও আবদুস সালামকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ৩৩ সদস্যবিশিষ্ট রংপুর মহানগর বিএনপির কমিটি অনুমোদন দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কমিটিকে এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে কেন্দ্রের অনুমোদন নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। তবে মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান শামুর নেতৃত্বে থাকা অংশ ওই কমিটি বাতিল করে নয়া কমিটি গঠনের দাবিতে সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভ করে। এ ঘটনার পর কার্যত মহানগর বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে।

মহানগর সভাপতি মোজাফফর হোসেন ও সম্পাদক মিজুর নেতৃত্বে থাকা অংশটি দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও শামসুজ্জামান শামুর নেতৃত্বাধীন নেতা-কর্মীরা তাতে অংশ নেন না। দুই গ্রুপ আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করে। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শামসুজ্জামান শামুর নেতৃত্বাধীন               অংশটি রংপুর সদর আসনে ২০-দলীয় জোটের প্রার্থী রিতা রহমানের পক্ষে আলাদাভাবে প্রচারণায় অংশ নেয়। একইভাবে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী কাওছার জামান বাবলার পক্ষেও আলাদাভাবে প্রচারণায় অংশ নেয় দুই গ্রুপ। কিন্তু মহানগরের ৩৩টি ওয়ার্ডের কোনোটিতে কমিটি না থাকায় সিটি করপোরেশন ও সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মহানগরের বেশির ভাগ কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টও দিতে পারেনি।

মহানগর বিএনপি নেতা বাবলু জানান, বিএনপি রংপুর মহানগরে সাংগঠনিকভাবে কোনো শক্তি অর্জন করতে পারেনি। হাতে গোনা কিছু নেতা-কর্মী ছাড়া তাদের অবস্থা কমিউনিস্ট পার্টির চেয়েও শোচনীয়। ফলে তাদের যুবদল, ছাত্রদল আর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীর ওপর নির্ভর করে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে হয়। তা ছাড়া মহানগর বিএনপির কমিটি গঠনের পর থেকে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব নিরসনে কেন্দ্র কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা এখন লেজেগোবরে। এবার রমজান মাসে দুই গ্রুপ দুই স্থানে পাল্টাপাল্টি ইফতার মাহফিলও করেছে। ৩০ মে নগরের ধাপ এলাকায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে মহানগর বিএনপি ইফতার মাহফিল ও জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেছে। অন্যদিকে শামসুজ্জামান শামুর নেতৃত্বে আগের দিন ইফতার মাহফিল ও জিয়াউর রহমানের মৃতুবার্ষিকী পালিত হয়েছে নগরের গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে জেলা ও মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে।

 

এ প্রসঙ্গে রংপুর মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান শামু বলেন, ‘রংপুর মহানগর বিএনপির বর্তমান কমিটি সম্পূর্ণ অবৈধ। কারণ তাদের ৩৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দেওয়ার পর ৩০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে কেন্দ্রের অনুমোদন নিতে বলা হয়েছিল। অথচ তারা আড়াই বছরেও তা করতে পারেনি। ফলে তাদের কমিটি তো অনুমোদিত নয়। এ কমিটির কার্যক্রমও অবৈধ। এ ছাড়া আড়াই বছরে মহানগরের ৩৩টি ওয়ার্ডের ১টিতেও কমিটি গঠন করতে পারেনি তারা।’ শামুর অভিযোগের বিষয়ে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম মিজু বলেন, ‘এক বছর আগে মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে মহাসচিবের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। তারা অনুমোদন না দিলে কী করার আছে? শামু সাহেব তো মহানগর বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, তারও তো দায়িত্ব আছে। আর মহানগরের ওয়ার্ডগুলোয় কমিটি গঠনের কাজ শুরু হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর