সোমবার, ২২ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

বড় অপরাধে কিশোররা নেপথ্যে কথিত বড় ভাইরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে বড় ও ভয়ঙ্কর অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কিশোররা। খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই, মাদক ব্যবসাসহ হরেক রকম অপরাধে আবির্ভাব ঘটেছে কিশোর নতুন মুখের। যাদের বেশির ভাগের বয়সই ২১ বছরের নিচে। ছোটদের অপরাধপ্রবণ করার পেছনে রয়েছে কথিত রাজনৈতিক ‘বড় ভাই’। এসব বড় ভাইদের মদদেই এলাকায় এলাকায় অপ্রতিরোধ্য ‘ছোট ভাইরা’। চট্টগ্রামের আলোচিত কয়েকটি কিশোর গ্যাং অপরাধ মামলার তদন্তের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-কমিশনার মোস্তইন হোসাইন। তার মতে, ‘সঙ্গ দোষেই শিশু- কিশোররা অপরাধে জড়ায়। এ ছাড়া সাইবার আসক্তির কারণে অপরাধী হচ্ছে কেউ কেউ।’ তিনি বলেন, ‘পুলিশ এককভাবে চাইলেই শিশু-কিশোর অপরাধ কমাতে পারবে না। এ ধরনের অপরাধ কমাতে প্রয়োজন পারিবারিক, সামাজিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ।’ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার কামাল হোসেন বলেন, ‘প্রত্যেক দিনই গড়ে তিন থেকে চারজন ২১ বছরের নিচে বয়সী বন্দী কারাগারে আসে। যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে, তাদের শিশু সংশোধনী কারাগারে পাঠানো হয়। এর চেয়ে বেশি বয়সীদের কারাগারে রাখা হয়। কম বয়সী বন্দীদের উল্লেখযোগ্যই হচ্ছে মাদক, খুন এবং মারামারি সংশ্লিষ্ট মামলার আসামি।’  সিএমপি সূত্রে জানা যায়, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে শিশু-কিশোরদের অপরাধে জড়িত হওয়ার খবরে তোলপাড় শুরু হলে সিএমপি কিশোর গ্যাংদের একটি তালিকা তৈরি করে। ওই তালিকায় তিন শতাধিক স্পটে প্রায় ৬০০ শিশু-কিশোর অপরাধীর নাম আসে। যারা খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। নগরীতে গত কয়েক মাসে সংঘটিত বেশ কয়েকটি খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ ও দস্যুতার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া আসামিদের উল্লেখযোগ্যই শিশু-কিশোর। এসব অপরাধ ছাড়াও সাইবার অপরাধেও জড়িয়ে পড়ছে শিশু-কিশোররা। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম কারাগারে ২১ জুলাই পর্যন্ত ১৮ থেকে ২১ বছর বয়সী ৪৫২ জন বন্দী রয়েছে।

যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে খুন, মাদক, অস্ত্র ব্যবসাসহ ভয়ঙ্কর অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মামলার আসামি।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএমপির এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরীর প্রত্যেকটা শিশু-কিশোর গ্যাংয়ের নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক কথিত ‘বড় ভাই’। এ বড় ভাইদের মদদেই এলাকায় এলাকায় অপ্রতিরোধ্য শিশু-কিশোর অপরাধী ছোট ভাইরা। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলেই বাধা হয়ে দাঁড়ায় বড় ভাইরা। তাই পুলিশ চাইলেও ব্যবস্থা নিতে পারে না।’

চট্টগ্রাম মেট্রো মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামীম আহমেদ বলেন, ‘ইদানীং শিশু-কিশোরদের মধ্যে মাদকসংশ্লিষ্ট অপরাধের অংশগ্রহণ বেড়েছে। মাদক পরিবহন, বেচাকেনা এবং টাকা লেনদেন করতে শিশু-কিশোরদের ব্যবহার করছে মাদক সিন্ডিকেটের হোতারা।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর