বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতাই বলতে হবে

-এইচ টি ইমাম

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতাই বলতে হবে

বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে গতকাল বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রণীত সংকলন গ্রন্থ ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার : নন্দিত উদ্ভাবন’-এর প্রকাশনা উৎসবে অতিথিরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে অনেকে জাতির জনক বলে। আমার মতে এটি একটি ভুল শব্দ। কারণ এতে বায়োলজিক্যাল টার্ম রয়েছে। শুধু ভুল নয় এটা বেআইনিও বটে। সাংবিধানিকভাবে তিনি জাতির পিতা। তাই, জাতির জনক নয়, বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতাই বলতে হবে। এইচ টি ইমাম গতকাল বিকালে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রণীত সংকলন গ্রন্থ ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার : নন্দিত উদ্ভাবন’-এর প্রকাশনা উৎসবে মোড়ক উন্মোচন করছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত। বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি অসীম সাহা ও অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালক কাশেম হুমায়ূন। স্বাগত বক্তৃতা করেন বইটির প্রকাশনা সংস্থার অধিকারী মাসুম রহমান।

এইচ টি ইমাম তার ভাষণে বলেন, জাতীয় চার নেতা যখন জেল খাটছিল তখন আমিও জেলে ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর খুবই আস্থাভাজন ছিলাম। তার পাশে ছায়ার মতোই থাকতাম। তার মতো বিশাল হৃদয়ের মানুষ আমি দ্বিতীয় আর কাউকে দেখিনি। তিনি বলেন, কোমল হৃদয়ের মানুষ বঙ্গবন্ধু চরম শত্রুকেও ক্ষমা করে দিতেন। তিনি ছিলেন অনেক বড় মাপের মানুষ। শত্রুদের ক্ষমা করলেও যুদ্ধাপরাধীদের তিনি কখনোই ক্ষমা করেননি। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ৭৫ এ সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমি জেলে ছিলাম। তখন যুদ্ধাপরাধীরাও আমার সঙ্গে জেলে ছিল। জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধীদেরকে মুক্তি দিয়ে আমাকে জেলে আটকে রাখেন। এর পর থেকেই ইতিহাসের বিকৃতি ঘটে। বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে ভাষা, শিল্প- সংস্কৃতি ও জাতীয়তাবোধ সম্পর্কে সচেতন করেছিলেন। আমাদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতির কারণে আমাদের একটি পৃথক রাষ্ট্রের প্রয়োজন হয়। এসব উপলব্ধি থেকে শোষণ ও জুলুমের জবাব দিয়ে জাতির পিতা আমাদেরকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু এমনই এক মহীরুহ যে, যখন বাংলাদেশকে কেউ চিনতোনা তখনও দেশের বাইরে সবাই বঙ্গবন্ধুকে চিনতো। শেখ মুজিবের দেশ হিসেবেই বিদেশীরাও বাংলাদেশকে চিনতো।

রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি ব্যাংকের নামকরণের বিষয়ে এইচ টি ইমাম বলেন. ছয়টি ব্যাংকের নামকরণ করেছি আমি। ওই সময়ে হাবিব ব্যাংক আধুনিকতা ও প্রগতির দিকে একধাপ এগিয়ে ছিল বলে আমি ব্যাংকটির নাম দেই অগ্রণী ব্যাংক। পরবর্তীতে আমি ওই ব্যাংকের চেয়ারম্যানও ছিলাম।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে বইটির উদ্যোক্তা অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ শামস-উল-ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বপ্নবাজ ছিলেন এবং তিনি আমাদের স্বপ্ন দেখাতে শিখিয়েছেন। তিনি আমাদেরকে পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্ত করেছেন। তিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। দেশ যদি স্বাধীন না হত তাহলে আমি হয়তো একজন ব্যাংকার হিসেবে এত বড় পদে আসীন হতে পারতামনা। কারণ বড় বড় পদগুলো দখল করে রাখতো পাকিস্তানিরা। বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমাদের এ জাতির অনেক ঋন। জাতির পিতাকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই আমার এই ছোট্ট আয়োজন।

তিনি জানান, মৌলভীবাজারের অগ্রণী ব্যাংকে ছোট্ট পরিসরে বঙ্গবন্ধু কর্ণারের যাত্রা শুরু করেছিলেন ২০১০ সালে। পরবর্তীতে আনসার-ভিডিপি ব্যাংক হয়ে অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বড় পরিসরে বঙ্গবন্ধু কর্ণার চালু করেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বই, ভাস্কর্য, প্রতিকৃতি, পত্রিকায় প্রকাশিত কলাম ইত্যাদি এই বঙ্গবন্ধু কর্ণারে সংরক্ষিত রয়েছে। সেসবের অংশবিশেষ এই বইটিতে সন্নিবেশিত হয়েছে। শামস-উল-ইসলাম দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু কর্ণার চালু করে জাতির পিতাকে চর্চার সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর