রংপুরে কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। কলেজে বাধ্যতামূলক কোচিংয়ের জন্য অতিরিক্ত টাকা না দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাত করেন অধ্যক্ষ। এইচএসসির প্রস্তুতিমূলক মডেল টেস্ট পরীক্ষার সময় শ্রেণিকক্ষে অধ্যক্ষ নিজে শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ের জন্য অতিরিক্ত টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেন। এতে কিছু শিক্ষার্থী আপত্তি তুললে তাদের বেধড়ক পেটান অধ্যক্ষ আবদুল ওয়াহেদ। এদিকে, এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল শিক্ষার্থীরা কলেজে বিক্ষোভ করে। একই সঙ্গে ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায়সহ অধ্যক্ষের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্তের দাবি জানান তারা। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সাড়ে ৭ হাজার করে টাকা নেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। নতুন করে আবারও বিনা নোটিসে ৩৪৩ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থীর কাছে ১৭০০ টাকা করে দাবি করেন অধ্যক্ষ। হুমকি দেন টাকা না দিলে ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর দেবেন না। এর প্রতিবাদ করে অনেক পরীক্ষার্থী কলেজে মডেল টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করায় অধ্যক্ষ শনিবার ও রবিবার শ্রেণিকক্ষে তাদের ওপর চড়াও হন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাতও করেন।
অধ্যক্ষের মারধরের শিকার ফায়েক হাসান, নিমি ইসলাম, লিমন হাসানসহ বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী বলেন, অধ্যক্ষ অন্যায়ভাবে সাপ্তাহিক পরীক্ষা ও মডেল টেস্টের জন্য আলাদা করে টাকা দেওয়ার চাপ দিয়েছেন। সাংবাদিকদের এসব জানানোর কারণে শিক্ষকরা ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর কম দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পরীক্ষার্থীর অভিভাবকদের। তাদের দাবি, মারধরের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ অতিরিক্ত পরীক্ষার ফি আদায়, কোচিং করতে চাপ সৃষ্টি এবং ভয়ভীতি দেখানোর ঘটনায় তদন্ত হওয়া জরুরি। এদিকে, সাপ্তাহিক পরীক্ষা ও মডেল টেস্ট বাবদ অতিরিক্ত টাকা গ্রহণের কথা স্বীকার করলেও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অধ্যক্ষ আবদুল ওয়াহেদ। তিনি বলেন, আমি কাউকে বেত্রাঘাত করিনি। কিছু শিক্ষার্থী প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ায় বকা দিয়েছি মাত্র। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার আঞ্চলিক উপ-পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের কোনোভাবেই শারীরিক নির্যাতন করতে পারে না। যদি এমনটি হয়ে তাকে জবাবদিহিতা করতে হবে।
