মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

‘অমানবিক’ খাদ্য সরবরাহ চট্টগ্রাম কারাগারে

ঠিকমতো দেওয়া হয় না মাছ মাংস

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

ব্রিটিশ আমলের নিয়মেই চলছে দেশের কারাগারগুলোতে খাদ্য সরবরাহ। দেড়শ বছর আগের নিয়মে বন্দীদের দেওয়া হয় মাছ, মাংস এবং অন্যান্য তরকারি। যা একজন সুস্থ মানুষের প্রয়োজনীয় আমিষের তুলনায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ। পর্যাপ্ত আমিষ জাতীয় খাবার সরবরাহ না হওয়ার ফলে দীর্ঘ মেয়াদি নানান শারীরিক রোগে ভুগছেন বন্দীরা। কারাগারের বন্দীদের খাবার সরবরাহ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলতে রাজি হননি কারা কর্তৃপক্ষের কেউ। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বন্দীদের জন্য মাছ, মাংস ও অন্যান্য সুবিধা বাড়ানোর একটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত তা বাস্তবায়ন হবে।’ পুষ্টিবিদ ডা. হাসিনা আকতার লিপি বলেন, ‘মানুষের প্রয়োজনীয় আমিষের ঘাটতি পূরণ হয় মাছ, মাংস, ডিমসহ আমিষ জাতীয় খাবার থেকে। একজন সুস্থ সবল মানুষের নিয়মিত পর্যাপ্ত আমিষ জাতীয় খাবার খেতে হবে। তা না হলে মাংসপেশী দুর্বল, ওজন কমে যাওয়া কিংবা বেড়ে যাওয়া, ব্রেনের ক্ষতি, হাড় ক্ষয় এবং প্রোটিন এনার্জি ম্যালনিউট্রিশন জাতীয় রোগসহ নানান রোগ দেখা দিতে পারে।’ জানা যায়, বছরের পর বছর ধরে কারাগারগুলোতে একজন সাধারণ বন্দীর জন্য রুটিন মাফিক মাছ ৩৬.৪৫ গ্রাম, মাংস ৩৮.৭৮ গ্রাম, মুরগি ৩৭.৯০ গ্রাম এবং সবজি ৭৫ গ্রাম সরবরাহ করা হয়।

 কিন্তু বরাদ্দ করা মাছ ও মাংসের ১০ থেকে ১৫ গ্রামই চলে যায় কাটা, ধোয়া এবং তেলে ভাজার সময়। ফলে প্রতি বন্দীর ভাগে মাছ ও মাংস পড়ে ১৮ থেকে ২২ গ্রাম। যা প্রয়োজনীয় আমিষের তুলনায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ। মাছ, মাংস ও তরকারি রান্নার জন্য যে পরিমাণে তেল, পিঁয়াজ, শুকনা মরিচ, হলুদ, ধনিয়া, লবণ এবং অন্যান্য মসলা দেওয়া হয় তাও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সহকারী সার্জন ডা. শামীম রেজা বলেন, ‘চট্টগ্রাম কারাগারে এলার্জি, হাড় ক্ষয় এবং ওজন কমে যাওয়ার কিছু রোগী পাওয়া যায়। এ রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।’

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সদ্য মুক্তি পাওয়া এক বন্দী বলেন, ‘কারাগারে যে বেলায় মাছ কিংবা মাংস থাকে সেদিন খাবার খেতে বন্দীদের খুবই কষ্ট হয়। মাছ বা মাংসের পিস ২০ থেকে ২৫ গ্রামের উপরে হবে না। বন্দীদের কষ্টের কথা চিন্তা করে মাছ ও মাংসের পরিমাণ বৃদ্ধি করা উচিত।’

সর্বশেষ খবর