বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাক্ষীকে হত্যা, জামিন হয়নি আসামির

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার সাক্ষী কমোডর (অব.) গোলাম রব্বানী হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবু নাসের চৌধুরীকে জামিন দেয়নি আপিল বিভাগ। তবে ওই আসামিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে এবং চিকিৎসা শেষে তাকে আবার কারাগারে ফেরত নিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। এর আগে, ২০০৪ সালের ১১ এপ্রিল মাইক্রোবাসে করে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন চট্টগ্রামের কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রোসেসিং জোনের (কেইপিজেড) তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও জেলহত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী কমোডর (অব.) গোলাম রব্বানী।

পরে ব্যাংককে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বঙ্গবন্ধুর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী নৌবাহিনীর সাবেক এ কর্মকর্তা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং নৌপরিবহন বিভাগের মহাপরিচালকও ছিলেন। হামলার ঘটনার পর কেইপিজেডের সাবেক প্রকৌশলী এ কে এম এমতাজুল ইসলাম চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় ‘হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগে একটি মামলা করেন। তবে গোলাম রব্বানীর মৃত্যুর পর এটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। ওই মামলায় ২০০৫ সালে চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আসামি মোহাম্মদ সেলিম, মোহাম্মদ হাশেম ও আবদুল মালেক সোহেলকে যাবজ্জীবন কারাদ  দেয়। অপর দুই আসামি আবু নাসের চৌধুরী ও হুমায়ুন কবির চৌধুরীকে পাঁচ বছর করে কারাদ  দেওয়া হয়। এ ছাড়া সাইফুল ইসলামকে খালাস দেয় আদালত। সেই রায়ের পর দি তরা হাই কোর্টে আপিল করেন। আবার আসামিদের সবার সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষও আপিল করে। হাই কোর্টে শুনানি শেষে কেইপিজেডের সাবেক মহাব্যবস্থাপক আবু নাসের চৌধুরী ও সাবেক প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরীর সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে যাবজ্জীবন কারাদ  ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৫ বছর সশ্রম কারাদ  দেওয়া হয়।

মোহাম্মদ সেলিমের আপিল খারিজ করে তার যাবজ্জীবন কারাদ  বহাল রাখে আদালত। এ ছাড়া আবদুল মালেক সোহেলের আপিল গ্রহণ করে তাকে খালাস দেওয়া হয়। এদিকে নিম্ন আদালতে খালাস পাওয়া সাইফুল ইসলামের বিষয়টি পুনরায় রায়ের জন্য বিচারিক আদালতে পাঠায় হাই কোর্ট। এর আগে, হাই কোর্টে আবেদনের পর ২০০৮ সালে হাশেমকে দ  থেকে খালাস দেয় হাই কোর্ট।

হাই কোর্টের রায় পাওয়ার পর আট সপ্তাহের মধ্যে হুমায়ুন কবির, আবু নাসের চৌধুরী ও মো. সেলিমকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে নিজ নিজ দ  ভোগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি এ সময়ের মধ্যে সাইফুলকেও আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। রায় অনুসারে ২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর আবু নাসের চৌধুরী ও মো. সেলিম বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

সর্বশেষ খবর