বুধবার, ২৬ মে, ২০২১ ০০:০০ টা
রংপুরে খাদেম রহমত আলী হত্যা

ফাঁসির আসামি জেএমবি সদস্য চান্দু গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

রংপুরের কাউনিয়ায় মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামি ও নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবি সদস্য আবদুর রহমান ওরফে চান্দু মিয়াকে গ্রেফতার করেছে এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকার সাভার থানার গেন্ডা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাকে রংপুরের কাউনিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর বারিধারায় এটিইউ সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার এসপি (মিডিয়া) মোহাম্মদ আসলাম খান বলেন, চান্দু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন। এই হত্যা মামলার সবাই বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হলেও তিনি কৌশলে নানা স্থানে অবস্থান করেছেন। এই খুনে তিনি সরাসরি জড়িত ছিলেন। রংপুরের পীরগাছায় বাড়ি চান্দু মিয়ার। হত্যার পর থেকে রিকশা চালানোসহ ছোটখাটো কাজ করে তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন। জেএমবির ইসাবা গ্রুপের অন্যতম সদস্য চান্দু মিয়া পুলিশকে জানিয়েছেন, খাদেম রহমত আলী সুরেশ্বরের পীরের অনুসারী ছিলেন। তার বাড়ির পাশে একটি মসজিদ রয়েছে। মসজিদের পাশে ঘর তুলে প্রতি বৃহস্পতিবার খাদেম তার অনুসারীদের নিয়ে গান বাজনা করতেন। রহমত আলী একজন মাজারপূজারি, শিরককারী এবং ভ-পীর বলে তারা আখ্যায়িত করে। পরে জেএমবির সদস্যরা তাকে গলাকেটে হত্যা করে।

২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর রাতে রংপুরের কাউনিয়া থানার টেপামধুপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি, পল্লী চিকিৎসক ও সুরেশ্বরের পীরের মাজারের খাদেম রহমত আলী খুন হন। স্থানীয় চৈতার মোড় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে চৈতার মোড়ে জেএমবির সদস্যরা তাকে গলা কেটে হত্যা করে। এ ঘটনায় রহমতের ছেলে অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ৩০ জুলাই ১৩ জঙ্গির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। অভিযুক্তরা হলেন- মাসুদ রানা, ইছাহাক আলী, লিটন মিয়া, সরওয়ার হোসেন, সাদাত ওরফে রতন, তৌফিকুল ইসলাম, আবু সাঈদ, সাখাওয়াত হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন, বিজয় ওরফে আলী ওরফে দর্জি ও বাবুল আখতার। এ ছাড়া আসামি জঙ্গি নজিবুল ইসলাম ও চান্দু মিয়া পলাতক ছিলেন।

নজিবুল গ্রেফতার হলেও চান্দুকে এতদিন গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ২০১৮ সালের ১৮ মার্চ খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলায় সাত জেএমবি জঙ্গিকে মৃত্যুদন্ডের রায় দেয় রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক নরেশ চন্দ্র সরকার। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানারও আদেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয়জনকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত।

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জেএমবির রংপুর অঞ্চলের কমান্ডার মাসুদ রানা ওরফে মন্ত্রী, এছাহাক আলী, লিটন মিয়া ওরফে রফিক, বিজয় ওরফে আলী ওরফে দর্জি, সাখাওয়াত হোসেন, সরওয়ার হোসেন ওরফে সাবু ও চান্দু মিয়া। তাদের মধ্যে ছয়জন রংপুর কারাগারে আছেন। উচ্চ আদালতে জঙ্গিদের ডেথ রেফারেন্স শুনানি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর রংপুরের কাউনিয়া থানার কাচু আলুটারী এলাকায় জাপানি নাগরিক হোসিও কোনিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় কাউনিয়া থানায় মামলা হয়। খাদেম রহমত আলীর মৃত্যুর ঘটনায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত সাত আসামির মধ্যে চারজনকে হোসিও কোনি হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। তারা হলেন- মাসুদ রানা ওরফে মন্ত্রী, এছাহাক আলী, লিটন মিয়া ওরফে রফিক এবং সরওয়ার হোসেন ওরফে সাবু।

সর্বশেষ খবর