মঙ্গলবার, ১ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

সুনামগঞ্জে সোজা পথে রেল বসানোর পক্ষে এমপিরা

মাসুম হেলাল, সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জ জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি রেললাইন বিশেষ একটি এলাকার পাশ ঘেঁষে নিয়ে যাওয়ার ‘পরিকল্পনা’ প্রকাশের পর জেলাজুড়ে বিতর্কের ঝড় বইছে। অভিযোগ উঠেছে, পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হলে ছাতক থেকে সুনামগঞ্জ জেলা সদর পর্যন্ত রেললাইন টানার যে সুলভ ও সহজ পথটি রয়েছে, সেটি রুদ্ধ হয়ে যাবে। এর বিপরীতে ঘোরানো-পেঁচানো ৫০ কিলোমিটার হাওরের দুর্গম এলাকা দিয়ে নির্মাণ করতে হবে রেললাইন। ফলে নির্মাণ ব্যয় কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। এতে জেলা সদরকে রেলের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জানা যায়, ১৯৫৪ সালে সিলেট থেকে রেললাইন স্থাপিত হয় জেলার শিল্পনগরী খ্যাত ছাতকের সঙ্গে। সেখান থেকে ২২ কিলোমিটার লাইন টানলেই রেলের সঙ্গে সহজে যুক্ত হবে সুনামগঞ্জ জেলা সদর। ২৭ মে সুনামগঞ্জ শহরে একটি বেসরকারি হাসপাতাল উদ্বোধন করতে এলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের কাছে রেললাইন নির্মাণের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সুনামগঞ্জকে রেলের সঙ্গে যুক্ত করব, এ ব্যাপারে আপনাদের মনে যেন সন্দেহ না থাকে। আমরা এটিকে মোহনগঞ্জ পর্যন্ত নিয়ে যাব। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে ৫ বছরের মধ্যে এটি সম্ভব। তবে কোন দিকে যাবে না যাবে সেটি আমার মতো ‘উম্মি’ (অনবিজ্ঞ) মানুষের পক্ষে ঠিক করা সম্ভব নয়। এটা করবেন ইঞ্জিনিয়াররা। রেল কেন, আমরা সুনামগঞ্জে বিমানবন্দর নির্মাণ করব। মানুষ ছোট ছোট বিমানে করে ঘুরতে এসে হাওরের মাছ খেয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে যাবে।” মন্ত্রী বলেন, ‘তবে একটি জিনিস আমাদের বিচার করতে হবে, ছাতক থেকে সুনামগঞ্জ পর্যন্ত যে ২২ কিলোমিটার পথ খালের পাড় দিয়ে গেছে, সেখানে কিন্তু জনবসতি কম। মাঝখানে কোনো বড় বন্দর নাই। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো পরিবেশ। হাওরের মতো দর্শনীয় সম্পদকে আমরা ধ্বংস করতে চাই না।’ সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক বলেন, ‘শত বছরের দাবি ছাতক থেকে সুনামগঞ্জ হয়ে মোহনগঞ্জে রেল নিতে হবে। কিন্তু বলা হচ্ছে, ছাতক ও দোয়ারাবাজার এলাকায় মানুষ নাই। এটি যোগাযোগবঞ্চিত, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা।’  সুনামগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য ও বিরোধীদলের হুইপ অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ (সুনামগঞ্জ সদর) বলেন, ‘ছাতক থেকে দোয়ারাবাজার হয়ে সুনামগঞ্জে রেললাইনের বিষয়টি আমরা সংসদে বারবার বলেছি। রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। সোজা পথে রেললাইন এলে দূরত্ব হবে মাত্র ২২ কিলোমিটার। এতে রেললাইন নির্মাণ সহজ ও সাশ্রয়ী হবে, সরকারের অর্থ ব্যয় অনেক কম হবে। পাশাপাশি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষ উপকারভোগী হবেন।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর