শুক্রবার, ৬ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

সচিব-পিএস পরিচয় দিয়ে কোটি কোটি টাকার প্রতারণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজেদের আইটি সচিব, আইটি সচিবের পিএস ও জমির দালাল পরিচয় দিত চক্রটি। এসব পরিচয়ে সম্পদশালী উচ্চবিত্তদের টার্গেট করে সুবিধামতো ভবনের ছাদে টাওয়ার নির্মাণ, বাড়ি বিক্রি ও জমি কেনার ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এরা। মাদারীপুরের কালকিনি থানার একটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম এ চক্রটি পরিচালনা করেন। গত বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এই চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওয়ারী বিভাগ। শহিদুল ছাড়াও গ্রেফতার অন্য তিনজন হলেন মূলহোতা মো. ইদ্রিস খান, মো. শাহাবুদ্দিন হাওলাদার ও জাহিদ সিকদার। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান যুগ্ম-কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) মো. মাহবুব আলম। তিনি বলেন, চক্রটির বিরুদ্ধে প্রতারণার ঘটনায় ভুক্তভোগী আবুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি রাজধানীর কদমতলী থানায় মামলা করেন। আসামিদের প্রতারণার কৌশল অত্যন্ত অভিনব। তারা অর্থবিত্ত ও সম্পদশালীদের সঙ্গে প্রতারণা করে থাকেন। এই চক্রের প্রধান ইদ্রিসের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে। সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুলের বিরুদ্ধে রয়েছে চারটি মামলা। এ ছাড়াও অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। প্রতারণার বিষয়ে মো. মাহবুব আলম বলেন, চক্রটি টার্গেটকৃত পরিবারের লোকদের কাছে নিজেদেরকে আইটি সচিব, আইটি সচিবের পিএস ও জমির মালিক হিসেবে পরিচয় দিত। টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের বিল্ডিংয়ের ছাদে রবি টাওয়ার নির্মাণ, জমি কেনাবেচার কথা বলে ভুয়া বায়নানামা সৃষ্টির মাধ্যমে আর্থিক লাভের প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে অভিনব কায়দায় জমি কেনার বানোয়াট বায়নানামা তৈরি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়াই ছিল তাদের লক্ষ্য।

এ জন্য একজনকে সচিব সাজিয়ে চক্রটি এমন নাটক করত যে, সচিবের কাছে টাকা কোনো বিষয় নয়। ‘সচিব স্যার ২০ লাখ টাকা বায়না করেছে, আপনিও (ভুক্তভোগী) ২০ লাখ টাকা বায়না করেন’ ‘এ জমিতে লাভ হবে’ বলে প্রলোভন দিত চক্রের সদস্যরা। পরে ভুক্তভোগী টাকা দিলেই লাপাত্তা হয়ে যেত তারা।

 এ প্রতারক চক্রটি এভাবে শতাধিক প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। প্রতারণা করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয় বিধায় এ প্রতারক চক্রকে রয়েল চিট এজেন্সি বা আরসিটি বলা হয়।

মূলত এই চক্রটি চালিয়ে থাকেন মাদারীপুরের কালকিনি থানার একটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল। আসামি শাহাবুদ্দিনের বড় ভাই তিনি। ডিবি এই সাবেক চেয়ারম্যানকে একাধিকবার গ্রেফতার করেছে। তিনি আরও কিছু চক্র নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন বলে জানা গেছে। এসব চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে।

সর্বশেষ খবর