শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে বন্ধ দেড় শতাধিক প্রতিষ্ঠান

১৮ মাসে পেশা বদল করেছেন ৪ হাজার শিক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতে বন্ধ দেড় শতাধিক প্রতিষ্ঠান

করোনার কারণে রাজশাহীতে বন্ধ হয়ে গেছে দেড় শতাধিক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এগুলোর মধ্যে বেশির ভাগ কিন্ডারগার্টেন ও প্রি-ক্যাডেট স্কুল। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রায় ৪ হাজার শিক্ষক পেশা বদল করেছেন। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও এসব স্কুলে আগে থেকে পড়তে থাকা প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

যেগুলো খোলা আছে সেগুলোতেও শিক্ষার্থীরা আসছেন না বলে জানিয়েছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানরা। দেড় বছরে ৩৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। শিক্ষকরা বেতন না পেয়ে চাকরি ছেড়েছেন। এ ছাড়া বাসা ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারীদের বেতনসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনাকারীরা।

রাজশাহী কিন্ডারগার্টেন অ্যান্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম সারওয়ার স্বপন জানান, গত বছরের ১৭ মার্চে সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার আগে বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত রাজশাহী জেলা এবং নগরে প্রায় সাড়ে ৪০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল। এর মধ্যে জেলায় ছিল ২০০ এবং মহানগরে ২৫০টি। এ সময় জেলায় ২৫-৩০ হাজার এবং মহানগরে ৩৫-৪০ হাজার শিক্ষার্থী এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ছিল। জেলা এবং মহানগর মিলিয়ে কর্মরত শিক্ষক ও কর্মচারীর সংখ্যা ছিল ৭ হাজার। তিনি জানান, জেলায় এরই মধ্যে ৬০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। নগরীতে বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা শতাধিক। এরই মধ্যে চার হাজার শিক্ষক ও কর্মচারী বাধ্য হয়ে চাকরি ছেড়েছেন। বাকি শিক্ষক এবং কর্মচারীরাও অনিয়মিত বেতন পাচ্ছেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে নগরীর দাসপুকুর এলাকার শিক্ষা স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘করোনা মহামারীর আগেও তার প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩০০। এখন অর্ধেকেরও কম। সামনে কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে তা বলতে পারছি না।’

বাগমারা উপজেলার ফতেপুর এলাকার বাসিন্দা এমদাদুল হক। তিনি ফতেপুর এলাকায় নাহার মডেল এবং রাজশাহী নগরীর তালাইমারীতে গ্রিন শিল্ড নামে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হওয়ার আগে নাহার মডেলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩২০ জন। এখন আছে ১০০ নিচে। এ ছাড়া শিক্ষক এবং কর্মচারী কমে ১৫ জন থেকে তিনজন আছেন। তাছাড়া গ্রিন শিল্ড স্কুলে শিক্ষার্থী ছিল আড়াই শ। এখন আছে ১০৬ জন। শিক্ষক ও কর্মচারী ছিলেন ১৯ জন। বর্তমানে আছেন ছয়জন।

কিন্ডারগার্টেন অ্যান্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমার তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫০০ শিক্ষার্থী ছিল। এখন অর্ধেকেরও কম। শিক্ষক ও কর্মচারী ৩০ জন থাকলেও এখন তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। আগামীতে চালাতে পারব কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর