সোমবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

টিকিটের জন্য রেলস্টেশনেই সাহরি-ইফতার

কমলাপুরে উপচে পড়া ভিড়, ফাঁকা সদরঘাট

নিজস্ব প্রতিবেদক

টিকিটের জন্য রেলস্টেশনেই সাহরি-ইফতার

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কিনতে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিট প্রত্যাশীদের উপচে পড়া ভিড়। ছবিটি গতকাল তোলা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

আসন্ন ঈদুল ফিতরে বাড়ি ফিরতে যানবাহনের টিকিট যেন সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে। অধিকাংশ রুটের বাস ও লঞ্চের আগাম টিকিট শেষ হয়ে গেছে তিন-চার দিন আগেই। গত শনিবার থেকে শুরু হয়েছে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি। তবে এক দিন আগে লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছে না কাক্সিক্ষত টিকিট। গতকাল ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রির দ্বিতীয় দিনে কমলাপুর রেলস্টেশনে ছিল না পা ফেলার জায়গা। এর মধ্যে অনেকেই ছিলেন যারা শুক্রবার থেকে কমলাপুরে অবস্থান করছেন টিকিটের জন্য। এবার ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ২০ এপ্রিল থেকে সদরঘাটে লঞ্চগুলোর আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে, চলবে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত। তবে গতকাল সকাল ১০টার দিকে সদরঘাটে গিয়ে যাত্রীদের তেমন ভিড় দেখা যায়নি। কয়েকটি কাউন্টারে কথা বলে জানা যায়, বরিশাল রুটের লঞ্চের অধিকাংশ আগাম টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। বাস টার্মিনালগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, উত্তরবঙ্গের আগাম টিকিট আগেই শেষ হয়ে গেছে। তবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু পরিবহনের টিকিট বিক্রি চলছে। এদিকে গতকাল কমলাপুরে দেখা যায় হাজারো মানুষ টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। ভিড় ছিল আগের দিনের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। টিকিটপ্রত্যাশীরা কাউন্টারের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছেন। গরমের কারণে অনেকেরই হাতে ছিল হাতপাখা। টিকিটের জন্য অপেক্ষারত মাসুম আবদুল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমি খুলনা যাব। পরিবারের সদস্য তিনজন। বাসে কষ্ট হবে ভেবে ট্রেনের টিকিটের জন্য এসেছি। শুক্রবার বিকালে ২৭ এপ্রিলের টিকিটের জন্য কমলাপুরে এসেছিলাম। একদিন অপেক্ষা করেও টিকিট পাইনি। আজ ২৮ এপ্রিলের টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছি। স্টেশনেই সাহরি ও ইফতার করেছি। বাসের টিকিট কাটিনি, ট্রেনের টিকিট না পেলে এবার বাড়ি যাওয়া হবে না।

ঈদ উপলক্ষে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে গত শনিবার। গতকাল দ্বিতীয় দিনে দেওয়া হয় ২৮ এপ্রিলের টিকিট। এভাবে ২৯ এপ্রিলের টিকিট ২৫ এপ্রিল, ৩০ এপ্রিলের টিকিট ২৬ এপ্রিল এবং ১ মের টিকিট ২৭ এপ্রিল বিক্রি করা হবে। তবে শুরুর দিন থেকেই অনলাইনে টিকিট কাটতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। এ ছাড়া দিন যত পার হচ্ছে, রেলস্টেশনে টিকিট প্রত্যাশীদের ভিড় বাড়ছে। আজ ও আগামীকাল ভিড় আরও বাড়তে পারে বলে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

যাত্রীরা বলছেন, টিকিটের জন্য অনেকে ২২-২৩ ঘণ্টা রেলস্টেশনে পড়ে আছেন। বিশেষ করে যারা বৃদ্ধ ও শিশুদের নিয়ে বাড়ি যাবেন, তারাই বেশি ভিড় করছেন ট্রেনের টিকিটের জন্য। যাত্রীদের অভিযোগ, কাউন্টারগুলোতে টিকিট দিচ্ছে খুব ধীর গতিতে। টিকিট প্রত্যাশীরা যেহেতু রাতেও স্টেশনে থাকছে, ২৪ ঘণ্টা টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা করলে ভোগান্তি কমতো।

এবার একজন যাত্রী সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কিনতে পারবেন। টিকিট কেনার সময় প্রত্যেক যাত্রীর জন্য এনআইডি কার্ড বা জন্মসনদ অবশ্যই কাউন্টারে দেখাতে হবে। এ কারণে অনেক পরিবারের একাধিক সদস্যকে লাইনে দাঁড়াতে দেখা গেছে। বাড্ডার বাসিন্দা হুমায়ুন বলেন, আমরা যাব ছয়জন। একা দাঁড়ালে চারটা টিকিট কিনতে পারব। তাই সকালে শ্যালককে সঙ্গে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর