বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

আনন্দের বন্যা ২১ জেলায়

পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকায় যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে সময় বাঁচবে, শিল্পায়ন ত্বরান্বিত হবে

রাহাত খান, বরিশাল

আনন্দের বন্যা ২১ জেলায়

উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত পদ্মা সেতু। শেষ মুহূর্তে দেওয়া হচ্ছে বিদ্যুৎসংযোগ। গতকাল শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্ট থেকে তোলা ছবি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের খবরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় উচ্ছ্বাস বইছে। দেশের সর্ববৃহৎ পদ্মা সেতু পার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর এই অঞ্চলের মানুষ। সেতুটি চালু হলে এই অঞ্চলে থেকে ঢাকায় যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে সময় বাঁচবে এবং আগামীতে শিল্পায়ন ত্বরান্বিত হবে বলে প্রত্যাশা করেন ব্যবসায়ী নেতারা। মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টে পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য বিগত সরকারের আমলে ৩০ মিনিট দক্ষিণাঞ্চল অচল কর্মসূচি পালন করেছিল এই অঞ্চলের সর্বস্তরের জনগণ। ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। টানা আট বছর নির্মাণ কাজ শেষে আগামী ২৫ জুন বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর দ্বার উন্মোচন করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর আনন্দের বন্যা বইছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। মাওয়া পয়েন্টে পদ্মা নদী পার হতে আর কোনো ভোগান্তি পোহাতে হবে না ভেবে উচ্ছ্বসিত তারা। বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, পদ্মা সেতু ঘিরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আমূল পরিবর্তন হবে। স্বল্প সময়ে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন করা যাবে। এতে প্রচুর সময় সাশ্রয় হবে। উদ্যোক্তারা বরিশালে শিল্প কলকারখানায় বিনিয়োগ করবে। এতে এই অঞ্চল শিল্পে সমৃদ্ধ হবে। আগামী দিনে এই অঞ্চলের শ্রমিকদের আর কাজের সন্ধানে ঢাকা বা অন্যত্র যেতে হবে না। বরিশাল সিটি করপোরেশনের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী ও বর্তমানে একটি বিদেশি সংস্থার পরামর্শক মো. তারিকুল হক বলেন, পদ্মা সেতু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েক কোটি মানুষের পরম পাওয়া। এই সেতুর কারণে পদ্মার পশ্চিম তীরের ২১ জেলার মানুষের জীবন মান পাল্টে যাবে। এই সেতুর কারণে দেশের মোট অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) দেড় ভাগ বৃদ্ধি পাবে। দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও চাঙা হবে। বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ প্রফেসর শাহ সাজেদা বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের খবরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সর্বস্তরের মানুষ খুশি। এই সেতু চালু হলে শুধু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল নয়, সারা দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। স্বল্প ব্যয়ে মানুষ রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে। সময়ও বাঁচবে। পদ্মা সেতুকে গর্বের ইতিহাস এবং গৌরবের ইতিহাস বলে মন্তব্য করেন তিনি।

 সেতুর প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ৩.১৮ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট এবং ৬.১৫ কিলোমিটার মূল সেতু সহ পদ্মা সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৯ কিলোমিটারের ওপরে। এর প্রস্থ ৭২ ফুট। ভায়াডাক্টে ৮১টি পিলার এবং নদীতে ৪২টি পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে পদ্মা সেতু। সড়ক ও রেলপথ ছাড়াও গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং অপটিক্যাল ফাইবার লাইন রাখা হয়েছে সেতুতে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর