রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচন ও সত্য জানাতেই হবে কমিশন

কূটনীতিকদের জানানো হলো বঙ্গবন্ধু হত্যার আদ্যোপান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড  এবং ওই ঘটনার দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া সম্পর্কে বিদেশি কূটনীতিকদের অবহিত করল আওয়ামী লীগ। দলীয় নেতৃবৃন্দ ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন মিশনের কূটনীতিকদের কাছে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন। একই সঙ্গে তারা বিদেশে পলাতক বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট দেশের সহযোগিতা কামনা করেন। তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই নয়, তারা দেশকেই হত্যা করতে চেয়েছিল। এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচন ও সঠিক ইতিহাস জাতির সামনে তুলে ধরতে কমিশন গঠন দরকার। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল আয়োজিত আলোচনা সভায় তারা এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটি ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ‘অ্যানালস অব হিস্ট্রি : দ্য ইনডেলিবল মার্ক অব আগস্ট’ (ইতিহাসের ইতিহাস : আগস্টের অমোচনীয় চিহ্ন) শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। আলোচনা সভায় আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজতে কমিশন গঠিত হবে। তবে এ কমিশন কারও বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য নয়, এটা সত্যকে জানার জন্যই গঠিত হবে। আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ইনডেমনিটি আইন তৈরি করে এ হত্যার বিচারে বাধা দেওয়া হয়। সে কারণেই পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর খুনিরা প্রতিষ্ঠিত হয়। খুনিরা দূতাবাসে চাকরি পায়। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারির পর বিচার তো দূরের কথা মামলা পর্যন্ত করার সুযোগ ছিল না। কোনো অসভ্য দেশেও এ ধরনের আইন থাকতে পারে না। তিনি আরও বলেন, ১৯৯৬ সালের অক্টোবরে আওয়ামী লীগ সরকার ইমডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করার উদ্যোগ নেয়। পরে জাতীয় সংসদে বাতিল করা হয়। এ আইনটি ছিল কালো অধ্যায়।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই নয়, তারা দেশকেই হত্যা করতে চেয়েছিল। আর ইমডেমনিটি আইন তৈরি করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন জিয়াউর রহমান। আমরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বলি, এ দেশে সবচেয় বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন জিয়াউর রহমান। কেন জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধে ইমডেমনিটি করেছেন, এটা বিএনপিকে জিজ্ঞেসা করতে হবে। তিনি হাজারো সেনা অফিসারকে হত্যা করেছিলেন।

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, আমরা ইমডেমনিটি আইন বাতিল করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছি। আমরা দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাজ করছি। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর কিছু খুনি এখনো বিদেশে পালিয়ে রয়েছে। আশা করব যেসব দেশে পালিয়ে রয়েছে, সে দেশের সরকার আইনের শাসনের বিষয়টি উপলব্ধি করে খুনিদের ফিরিয়ে দেবেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জমির। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সচিব শাম্মি আহমেদ, সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান, বঙ্গবন্ধুহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী আবদুর রহমান শেখ রমা।  অনুষ্ঠানে জাপান, রাশিয়া, জার্মানিসহ ২৫-৩০টি দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা শেষে আমন্ত্রিত অতিথি ও কূটনীতিকরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে তারা বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শন করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর