শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

হাসপাতাল থেকে এসে কেক কেটে গেলেন কবি হেলাল হাফিজ

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

হাসপাতাল থেকে এসে কেক কেটে গেলেন কবি হেলাল হাফিজ

রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন কবি হেলাল হাফিজ। গতকাল ছিল তাঁর জন্মদিন। জন্মদিনে ভক্তরা তাঁর সঙ্গ থেকে বঞ্চিত হোন তা তিনি চাননি। তাই হাসপাতাল থেকে এসে জন্মদিনের কেক কেটে গেলেন গত শতকের সত্তরের দশক থেকে তুমুল জনপ্রিয় কবি হেলাল হাফিজ। বিকালে বাংলামোটরের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ছিল সেই আনন্দ আয়োজন। কবি হেলাল হাফিজের ৭৫তম জন্মদিন ও তাঁর কবিতা নিয়ে প্রবন্ধগ্রন্থ ‘ফুল ও ফুলকি’র মোড়ক উন্মোচনের এই আয়োজন করেন কবির শুভাকাক্সক্ষীরা। বইটি লিখেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ আলী। এসেছিলেন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক কবি মিনার মনসুর, কবি টোকন ঠাকুর, দিলতাজ রহমান, কলামিস্ট কাজল রশীদ শাহীনসহ বহু মানুষ। কবির দীর্ঘজীবন কামনা করে টোকন ঠাকুর বললেন, ‘হেলাল ভাইয়ের সঙ্গে অনেক আড্ডা জমে আছে এখনো। সেই আড্ডা দেওয়ার জন্য হলেও তাঁকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ফিরতে হবে।’

জীবনের ৭৫তম বর্ষে এসে নিজের সার্থক কাব্যজীবনের কথা স্মরণ করলেন হেলাল হাফিজ। তিনি বলেন, ‘সত্তর-আশির দশকে দেখেছিলাম, যেদিন মেলা শেষ হতো, পরদিন থেকে বইয়ের নামগন্ধ পাওয়া যেত না। কোনো কবিতার কথা শোনা যেত না। এটা আমাকে ভীষণ পীড়িত করেছিল। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, খুব কম লিখব। আমার বইয়ের সংখ্যা হবে খুব কম, কিন্তু এমন কিছু লিখব, যা অনেক মেলা পর্যন্ত দীর্ঘায়ু হবে। এমন বই লিখব, যা মানুষের মন ও মগজে দীর্ঘায়ু হবে।’ তিনি বলেন, ‘যাপিত জীবনের সিংহভাগ আমি কবিতার পেছনে খরচ করেছি। কবিতাকে ধ্রুবতারা করে জীবনযাপন করেছি। বিনিময়ে যে ভালোবাসা, আদর, সম্মান পেয়েছি তা অভূতপূর্ব, অতুলনীয়। সব মানুষ টাকা জমাতে চায়, আমি জমাতে চেয়েছি মানুষ। সেই মানুষ জমাতে গিয়ে যে গাঢ় অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে, সেটিও জীবনে বেদনার ইতিহাস হয়ে আছে।’

জন্মদিনের এই আসরে আসা প্রত্যেকে তাঁর দীর্ঘ জীবন প্রত্যাশা করেন। শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন সাহিত্যের শিক্ষক মিল্টন বিশ্বাস, কবি মনির ইউসুফ। স্বরচিত কবিতা পড়েন মিনু আক্তার, হেলাল হাফিজের কবিতা আবৃত্তি করেন ইসহাক আলী ও শিমুল সালাহ্উদ্দিন প্রমুখ। ‘ফুল ও ফুলকি’ বইয়ের লেখক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘নিজেকে দীর্ণ করেছি হেলাল হাফিজের কবিতায়। সেই ভালোবাসা থেকেই বইটি লিখেছি। তিনি আমাকে বলেছেন, মহাকালের কাছে তাঁর কবিতার সঙ্গে হেঁটে হেঁটে আমার বইটিও যাবে।’ এই আসরে নিজের বেশ কয়েকটি কবিতা পাঠ করেন হেলাল হাফিজ; আর বলেন, ‘কবিতা আমাকে অনেক দিয়েছে। এই ঋণ পরিশোধ করার ক্ষমতা আমার নেই। আপনাদের ভালোবাসা, আদর, সম্মান আমাকে তৃণ থেকে উদ্ভিদে রূপান্তর করেছে। আমি আপনাদের কাছে নত হই বিনত চিত্তে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর