বুধবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
সংক্ষিপ্ত

বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে দেশের অর্থনীতি ৩২ সাল পর্যন্ত ঝুঁকিমুক্ত : অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড-আইএমএফ বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ধারণ সক্ষমতার ওপর ২০৩২ সাল পর্যন্ত বিশ্লেষণ করেছে; যা ২০২২ সালের মার্চে প্রকাশিত হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০৩২ সাল পর্যন্ত দেশীয় ঋণসহ বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঝুঁকিমুক্ত। জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনের চতুর্থ দিন গতকাল টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বেগম লুৎফুন নেসা খানের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদে সভাপতিত্ব করেন। প্রশ্নকর্তা জানতে চান, বৈদেশিক ঋণ জিডিপির শতকরা কত হলে দেশের অর্থনীতি ঝুঁকিতে পড়ে; বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও জিডিপির অনুপাত কত ও এটা অর্থনীতিকে ঝুঁকিতে ফেলেছে কি না?

অর্থমন্ত্রী সংসদকে জানান, বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ সামষ্টিক অর্থনীতি ও অন্যান্য বিষয়াদি বিশ্লেষণের মাধ্যমে দেশের বৈদেশিক ঋণের ঝুঁকিসীমা নির্ণয় করে থাকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফের মতে, বৈদেশিক ঋণ জিডিপির ঝুঁকিসীমা সর্বোচ্চ ৪০%। বিগত ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া বৈদেশিক ঋণ ছিল জিডিপির ১৩.৭৮%।

২০১৬-১৭ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণ জিডিপির শতকরা হারের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী জানান, পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে, বৈদেশিক ঋণ জিডিপির শতকরা হার অনুযায়ী বাংলাদেশ ঝুঁঁকিসীমার অনেক নিচে অবস্থান করছে। বৈদেশিক ঋণ ও জিডিপির শতকরা হার এবং ঋণের সাসটেইনেলিবিটি বিশ্লেষণপূর্বক দেখা যায়, বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঝুঁঁকিমুক্ত ও সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে। মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বড় কোনো ঝুঁকির আশঙ্কা নেই।

কৃষি ব্যাংকের অনাদায়ী ঋণ ২৮ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা :  ঢাকা-১৮ আসনের এমপি মোহাম্মদ হাবিব হাসানের লিখিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী সংসদকে জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের অনাদায়ী ঋণ ২৮ হাজার ২৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এ সময় তিনি জেলাওয়ারি দেশের ৪৮টি জেলার কৃষি ব্যাংকের অনাদায়ী ঋণের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। এতে দেখা যায়, সব চেয়ে বেশি অনাদায়ী ঋণ ঢাকা জেলায়, যার পরিমাণ ৪ হাজার ১৯২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। সব চেয়ে কম অনাদায়ী ঋণ যশোর জেলায়, যার পরিমাণ ১ কোটি ১ লাখ টাকা। ঢাকার পর বেশি অনাদায়ী ঋণ ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা জেলায়। এর মধ্যে ময়মনসিংহ জেলায় অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৭৪৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা, চট্টগ্রাম জেলায় অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৫৯৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, কুমিল্লা জেলায় অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৩০ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

২০২২  জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ১৯.৫৮ বিলিয়ন ডলার : অর্থমন্ত্রী সংসদে জানিয়েছেন, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বিদেশ থেকে সর্বমোট ১৯ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রবাস আয় দেশে এসেছে। এ সময় সব চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে, যার পরিমাণ ৩ হাজার ৭০৯ কোটি ১০ লাখ ইউএস ডলার। আর ইরান থেকে সব চেয়ে কম রেমিট্যান্স এসেছে, যার পরিমাণ মাত্র ৪ লাখ ইউএস ডলার। গতকাল সরকারদলীয় এমপি নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

সংসদে দেওয়া অর্থমন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী ২০২২ সালের জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৭০৪ কোটি ৫৩ লাখ ইউএস ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ১ হাজার ৪৯৬ কোটি ৯ লাখ ডলার, মার্চে ১ হাজার ৮৫৯ কোটি ৯৭ লাখ ডলার, এপ্রিলে ২ হাজার ৯ কোটি ৪৯ লাখ ডলার, মে  মাসে ১ হাজার ৮৮৫ কোটি ৩৪ লাখ ডলার, জুনে ১ হাজার ৮৩৭ কোটি ২৭ লাখ ডলার, জুলাইয়ে ২ হাজার ৯৬ কোটি ৩২ লাখ ডলার, আগস্টে ২ হাজার ৩৬ কোটি ৯৩ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে ১ হাজার ৫৩৯ কোটি ৫১ লাখ ডলার, অক্টোবরে ১ হাজার ৫২৫ কোটি ৪৩ লাখ ডলার এবং নভেম্বরে রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৫৯৪ কোটি ৭৩ লাখ ইউএস ডলার।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর