শনিবার, ৪ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে বন্ধ হচ্ছে খেলার মাঠে মেলা

এ উদ্যোগ ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নিতে হবে : নাছির

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে বন্ধ হচ্ছে খেলার মাঠে মেলা

চট্টগ্রামের আউটার স্টেডিয়াম মাঠে বছরের প্রায় সময় লেগে থাকে মেলার নামে মাঠ দখলের অসুস্থ এক প্রতিযোগিতা। তবে এবার সেই সব মেলা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। শুধু আউটার স্টেডিয়াম মাঠ নয়, রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠেও কোনো ধরনের মেলার আয়োজন হবে না। মেলার জন্য সীতাকুন্ড জঙ্গল ছলিমপুরে যে খাস জমি রয়েছে সেখানে স্থান নির্ধারণ করে দেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ উদ্যোগে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন করে আশার আলো দেখা দিয়েছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক সিজেকেএস সভাপতি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, আউটার স্টেডিয়ামের মাঠ সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সার্ভেয়ার দিয়ে পরিমাপ করেছি। মাঠের যে অংশটুকু রয়েছে সেটি লাল দাগ দিয়ে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। মাঠের ভিতরে যদি কোনো স্থাপনা থাকে সেসব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। মাঠের মধ্যে যেসব স্থাপনা থাকবে সব কটিই অপসারণ করা হবে। চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় ১৯১টি ইউনিয়ন রয়েছে। ১ বছরের মধ্যে ১৯১টি খেলার মাঠ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় তৈরি হবে। শুধু ক্রিকেট নয়, সব খেলায় গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। চট্টগ্রামের খেলার মাঠ দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পলোগ্রাউন্ড মাঠ নিয়ে কাজ করছি, সারা বছর যাতে খেলোয়াড়রা প্রশিক্ষণ নিতে পারে। আউটার স্টেডিয়ামের সীমানা নির্ধারণ করে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হবে। এরপর সীমানা প্রাচীর দেওয়া হবে। ওয়াকওয়ের সিস্টেম থাকবে, যাতে বয়স্ক মা-বাবারা হাঁটাহাঁটি করতে পারেন।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে জাতীয় মানের খোলোয়াড় তৈরি করতে হলে ক্রিকেট, ফুটবল, হকিসহ আলাদা আলাদা পাঁচটি অনুশীলন মাঠ প্রয়োজন। বিশেষায়িত মাঠ না হলে ক্রীড়াঙ্গনে প্রকৃত সুফল প্রাপ্তি দুরূহ হয়ে উঠবে। জেলা প্রশাসক এই বিশেষায়িত মাঠের গুরুত্ব অনুধাবন করেছেন। আশা করছি, খুব দ্রুতই চট্টগ্রাম ফুটবল-হকি ও নারীদের জন্য পৃথক মাঠ পাবে। এ উদ্যোগকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নিতে হবে। জানা যায়, চট্টগ্রাম শহরে এক সময় পর্যাপ্ত খেলার মাঠ থাকলেও দিন দিন তা সংকুচিত হয়ে আসে। নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের মাঠটির মালিকানা ছিল আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছে। এখন এর মালিক চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা (সিজেকেএস)। প্রতিবছর বৃক্ষমেলা, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা, নিটল-টাটা গাড়ির মেলা, কারুপণ্য মেলা ইত্যাদি এখানে হয়ে থাকে। এ ছাড়াও নতুন করে ক্যাটেল এক্সপো শুরু হয়েছে এ মাঠে। রাজনৈতিক নানা কারণে এসব মেলা বন্ধ করতে পারে না কর্তৃপক্ষ। মেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পরও এখানে ইট-সুরকি থেকে যায়। চলতি মাসে চলছে চট্টগ্রাম চেম্বারের আয়োজনে ৩০ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। ফলে এক সময় আকরাম খান, তামিমরা যে মাঠে খেলে জাতীয় দলে ভূমিকা রাখছে দেশের জন্য তাদের কোনো উত্তরসূরি উঠে আসছে না মাঠ সংকটে।

চট্টগ্রামের মাদারবাড়ি শোভনীয়া ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক নুর জাহেদ বাবলু বলেন, খেলার মাঠে খেলাধুলা হবে, এখানে মেলা কেন হবে। মেলার জন্য আলাদা একটি স্থান নির্ধারণ করে দিলে সেখানেই মেলা হবে। নগরীর মাঠগুলো দখল হয়ে যাওয়ার কারণে খেলাধুলার সুযোগ নেই। যার কারণে এখন জাতীয় পর্যায়ে চট্টগ্রামের প্রতিনিধিত্ব করার মতো খেলোয়াড়ও ইদানীং উঠে আসছে না। জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর