শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
সংক্ষিপ্ত

খুলনায় ঘাট ইজারায় ‘দ্বৈত প্রশাসন’

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনায় নদী পারাপারের বিভিন্ন খেয়াঘাটের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে খুলনা জেলা পরিষদ ও সিটি করপোরেশন। ঘাট বন্দোবস্ত (ইজারা) দিতে দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। ঘাট পরিচালনায় ‘দ্বৈত প্রশাসন’ সৃষ্টি হওয়ায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি ও অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। এদিকে বিরোধ নিষ্পত্তিতে পদক্ষেপ নিতে স্থানীয় সরকার বিভাগে দাফতরিক চিঠি দিয়েছে খুলনা জেলা পরিষদ। তবে আগামী ১ বৈশাখ থেকে জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রিত সব ঘাট নিজেরাই বন্দোবস্ত দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে কেসিসি।

জানা যায়, খুলনা শহরের সঙ্গে নদীপথে বিভিন্ন উপজেলার যোগাযোগে রূপসা খেয়াঘাট, কাস্টমস ঘাট, জেলখানা ঘাট, দৌলতপুর বাজার খেয়াঘাট, বার্মাশীল, নগরঘাট/রেলিগেট ঘাট ও স্টিমারঘাট খেয়াঘাট নিয়ে মালিকানা দ্বন্দ্বে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে কেসিসি ও জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম মাহমুদুর রহমান ২৮ মার্চ স্থানীয় সরকার বিভাগে দেওয়া চিঠিতে জানান, জেলা পরিষদ সৃষ্টিলগ্ন থেকে সরকার কর্তৃক ঘোষিত এসব ঘাটের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯-এর ৪১ ধারা তফসিলের ৯.২ নম্বর উপধারায় সরকার কোনো জলাশয়ের অংশবিশেষকে ‘সাধারণ খেয়া পারাপার’ হিসেবে ঘোষণা করে তা’ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব করপোরেশনের ওপর ন্যস্ত করতে পারবে।

কিন্তু যেসব ঘাট আগে থেকেই খেয়াঘাট হিসেবে ঘোষিত এবং ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের ধারাবাহিকতায় জেলা পরিষদের ওপর ন্যস্ত, সেগুলো পুনরায় ঘাট ঘোষণা দেওয়া আইনবহির্ভূত। জেলা পরিষদ পরিচালিত খেয়াঘাট সিটি করপোরেশনের বন্দোবস্ত দেওয়ার ঘোষণার যৌক্তিকতা নেই। এ বিষয়ে সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, সিটি করপোরেশনের পরিপত্র অনুযায়ী অর্ধেক নদী পর্যন্ত জায়গা সিটি করপোরেশনের আওতাধীন। শহরের মধ্যে জেলা পরিষদের রাস্তা নেই; তাদের সংস্কারের কাজও নেই। যারা নদী পার হয়ে শহরে আসে তারা সিটি করপোরেশনের রাস্তা ব্যবহার করে। রূপসা ঘাটের এপার-ওপারে সিটি করপোরেশন ২৫ কোটি টাকার সংস্কার কাজ করেছে। সেই ঘাটটিও জেলা পরিষদ টেন্ডার দিয়েছে। তিনি বলেন, এতদিন ঘাট নিয়ে কোনো জটিলতা হয়নি। কিন্তু রূপসা খেয়াঘাট টেন্ডার দিয়েই জটিলতার সৃষ্টি করেছে। এ কারণে পরিপত্র অনুযায়ী শহরের সঙ্গে সংযুক্ত সব খেয়াঘাট এখন থেকে কেসিসিই নিয়ন্ত্রণ করবে। এদিকে খেয়াঘাট নিয়ে অচলাবস্থার মধ্যেই কেসিসির ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সামছুজ্জামান মিয়া স্বপন খুলনার ডাকবাংলা মোড়ে জেলা পরিষদের নির্মাণাধীন স্থাপনার তালা ভেঙে জায়গার দখল নিয়েছেন। জেলা পরিষদের কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারি রেকর্ডে ডাকবাংলা মোড়ের ওই স্থানে জেলা পরিষদের মালিকানায় ৫০.৪০ শতাংশ জমি রয়েছে।

সিএস, এসএ ও আরএস খতিয়ানের মাধ্যমে ওই জমির রেকর্ডীয় মালিক জেলা পরিষদ। সেখানে সিটি করপোরেশনের মালিকানা স্বত্ব নেই। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই না করেই নিজেদের সম্পত্তি দাবি করা ও মার্কেটে তালা দেওয়ার ঘটনা দুঃখজনক।

তবে ডাকবাংলা মোড়ের ওই স্থানে ১৮ শতক জমির মালিক সিটি করপোরেশন বলে দাবি করে মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, রেকর্ড অনুযায়ী জেলা পরিষদ ২৯ শতক ও কেসিসির ১৮ শতক জমি রয়েছে। আমাদের জমিতে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করায় আমরা বাধা দিয়েছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর