রবিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

বগুড়ার শেরপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার শেরপুরে আওয়ামী লীগের পদবঞ্চিতরা উপজেলা ও পৌর কমিটির নেতাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। গত শুক্রবার রাত ১০টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত শহরের বাসস্ট্যান্ডের মুন ইরাফী গার্ডেন সিটি নামে মার্কেটে অবস্থিত একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভিতর তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এ সময় একে অপরকে লক্ষ্য করে অশ্লীল ভাষায় গালাগালও করেন। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে তৈরি হয় চরম উত্তেজনা। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে শহরজুড়ে। সাড়ে তিন ঘণ্টা পর পুলিশ অবরুদ্ধ নেতা-কর্মীদের উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেয়। ঘটনার পর থেকে শহরে থমথমে অবস্থা। ওই ঘটনার জের ধরে আবারও দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জানা যায়, এক বছর আগে অনুষ্ঠিত শেরপুর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ত্যাগী ও পরিশ্রমী কর্মীদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ তোলেন দলের একাংশের নেতা-কর্মীরা। তারা কমিটি পুনর্গঠনের জোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু তাদের দাবি উপেক্ষা করে সম্প্রতি উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হয়। এতে স্থান না পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন পদবঞ্চিতরা। তারা বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে মাঠে নেমেছেন। সেই সঙ্গে অবিলম্বে কমিটি ভেঙে দিয়ে পুনর্গঠনের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দেন। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার রাতে অবরোধ শুরু করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক দলীয় নেতা-কর্মী জানান, রাত ১০টার দিকে শেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সারোয়ার রহমান মিন্টু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেনের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী ওই মার্কেটের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে দলীয় আলোচনা করছিলেন। এ সময় পদবঞ্চিত গ্রুপের নেতা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুল ইসলাম  পোদ্দার ববির নেতৃত্বে দলীয় নেতা-কর্মীরা ওই মার্কেটের সামনে অবস্থান নেন। তার সঙ্গে স্থানীয় সরকারদলীয় এমপিপুত্র আসিফ ইকবাল সনি, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তারিকুল ইসলাম তারেক, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ভুট্টোসহ ছাত্রলীগের সাবেক দুই শতাধিক নেতা-কর্মী ছিলেন। এদিকে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ায় চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। সংঘর্ষের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে শহরজুড়ে। এভাবে রাত দেড়টা পর্যন্ত চলে উভয় গ্রুপের মধ্যে টানটান উত্তেজনা।

পরে খবর পেয়েই জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর সার্কেল) সজীব শাহরীন ও শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খোন্দকারের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। সেই সঙ্গে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেয়। এরপরও মারমুখী অবস্থানে থাকেন দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা। এক পর্যায়ে পুলিশের কঠোর তৎপরতা ও অবরুদ্ধ নেতা-কর্মীদের উদ্ধার করে নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাধ্যমে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।

সর্বশেষ খবর