হঠাৎ করে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বেড়েছে বিদ্যুতের ভেলকিবাজি। তীব্র গরমে পুড়ছে চট্টগ্রামের পথঘাট। একদিকে রমজান, তার ওপর গরমের তীব্রতার মধ্যে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে নগর জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। বিদ্যুতের লোডশেডিং কখনো সাহরির সময়ে আবার কখনো ইফতার সময়ে। রাতের বেলায়ও বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার কারণে বেড়েছে মানুষের ভোগান্তি। পিডিবি চট্টগ্রামের প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, যে গরম পড়ছে তাতে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে। এর মধ্যে চালু থাকা কয়েকটি পাওয়ার প্ল্যান্টও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। যার কারণে আমাদের একটু লোডশেডিং হচ্ছে। তবে আশার কথা হচ্ছে শিকলবাহার একটি বন্ধ থাকা পাওয়ার প্ল্যান্ট চালু হয়েছে। জানা যায়, চট্টগ্রামে ছোট-বড় মিলে ২৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে বন্ধ রয়েছে ১৩টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। চালু থাকা ১১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ২৫৮ মেগাওয়াট হলেও উৎপাদন হচ্ছে ৬৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। উৎপাদনে থাকা ১১টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র তাদের সক্ষমতার অর্ধেক উৎপাদন করছে এবং অপর ছয়টি খুঁঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। গ্রীষ্মকালীন এ সময়ে চট্টগ্রামে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। গত রবিবার সকাল ১১টার দিকে ১ হাজার ৪৫৯ মেগাওয়াট চাহিদা থাকলেও উৎপাদন হয়েছে ১ হাজার ১৮৩ মেগাওয়াট। বিকাল ৫টার পর থেকে চাহিদা বেড়ে দাড়ায় ১ হাজার ৪৬৫ মেগাওয়াট এবং উৎপাদন ছিল ১ হাজার ১৩২ মেগাওয়াট। রবিবার সকালে লোডশেডিং করা হয়েছে ২৭৬ মেগাওয়াট ও বিকালে করা হয়েছে ৩৩৩ মেগাওয়াট। পিডিবির তথ্যমতে, রাউজান উপজেলার ২১০ মেগাওয়াটের দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে একটি বন্ধ রয়েছে। ১ নম্বর কেন্দ্র থেকে পাওয়া যাচ্ছে ১২০ মেগাওয়াট। কাপ্তাইয়ের পাঁচটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রর উৎপাদন ক্ষমতা ২৪২ মেগাওয়াট। পাঁচটির মধ্যে চালু আছে একটি আর চারটি বন্ধ রয়েছে। কাপ্তাই-১ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উৎপাদন ক্ষমতা ৪৬ মেগাওয়াট কিন্তু উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট। শিকলবাহার তিনটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে চালু রয়েছে একটি। চালু থাকা জুডিয়াক পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে উৎপাদন হচ্ছে ৫৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এ ছাড়া বন্ধ রয়েছে হাটহাজারী ১০০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট, ২৪ মেগাওয়াটের রিজেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট, ১০০ মেগাওয়াটের এনার্জি প্যাক, টেকনাফ সোলার প্ল্যান্ট ও কাপ্তাই সোলার প্ল্যান্ট বন্ধ রয়েছে। চালু থাকার তালিকায় সেগুলোতেও সক্ষমতা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না। তার মধ্যে দোহাজারী ১০০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টে ৭৯ মেগাওয়াট, ৫০ মেগাওয়াটের ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টে ১৭ মেগাওয়াট, ৩০০ মেগাওয়াটের জুলধা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ১৭৭ মেগাওয়াট, ২৬ মেগাওয়াটের আরপিসিএল পাওয়ার প্ল্যান্টে ১২ মেগাওয়াট, ৫০ মেগাওয়াটের বারাকা পাওয়ার প্ল্যান্টে ১২ মেগাওয়াট, ১০৫ মেগাওয়াটের শিকলবাহা বারাকা পাওয়ার প্ল্যান্টে ৮৫ মেগাওয়াট, ১১০ মেগাওয়াটের বারাকা কর্ণফুলী বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৩৩ মেগাওয়াট, ৩০০ মেগাওয়াটের ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টে মাত্র ১৩০ মেগাওয়াট ও ১১৬ মেগাওয়াটের আনলিমা পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে শুধু ২১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।