বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
পদ্মা সেতুর সুফল

দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বস্তির ফেরা

হয়রানি ভোগান্তি অতিরিক্ত ভাড়া উধাও

রাহাত খান, বরিশাল

দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বস্তির ফেরা

বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশ থেকে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামে আসা এবং ঈদ উদ্যাপন শেষে ফের কর্মস্থলে যাওয়া সবকিছুই হয়েছে ঝামেলাহীন। নৌ কিংবা সড়কপথ কোথাও এবার দেখা যায়নি যাত্রী হয়রানি কিংবা বাড়তি ভাড়া আদায়ের চিত্র। এক পদ্মা সেতুর কারণে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হয়ে যাওয়ায় এমন স্বস্তির ঈদযাত্রা সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সুবিধাভোগীরা।প্রতিবছর ঈদের আগে রাজধানীসহ সারা দেশ থেকে নৌ কিংবা সড়কপথে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছতে অনেক বেগ পেতে হতো জনসাধারণকে। সড়ক আর নৌপথে রয়েছে নির্ধারিত বাস-লঞ্চ। কোনো কারণে টিকিট বা আসন না পেলে অনিশ্চিত হয়ে পড়ত ঈদে বাড়ি ফেরা। অতিরিক্ত অর্থ খরচ আর ভোগান্তি সঙ্গী করে বাড়ি ফিরতে হতো তাদের। প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দঘন ঈদ কাটিয়ে কর্মস্থলে ফেরার সময়ও ছিল একই চিত্র। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ঈদে দক্ষিণের মানুষের বাড়ি ফেরা কিংবা ঈদ-পরবর্তী কর্মস্থলে যাওয়া কোনোটাই এখন আর কঠিন নয়। পদ্মা সেতুর কল্যাণে এখন বরিশালের পাঁচ জেলার উপজেলা পর্যায় থেকেও ঢাকাসহ সারা দেশের বাস ছাড়ছে ঘণ্টায় ঘণ্টায়। পরিবহন কোম্পানিগুলো দিনরাত যাত্রীবোঝাই বাস ছাড়ছে গন্তব্যের উদ্দেশে। বরিশালের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের ঈগল পরিবহনের কাউন্টার-মাস্টার ফয়সাল কবির জানান, এবারের ঈদযাত্রা অনেক স্বস্তিদায়ক। ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে যাত্রী ফিরতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার থেকে যাত্রীর চাপ কিছুটা বেড়েছে। অতিরিক্ত চাপ সামলাতে পরিবহন কোম্পানিগুলো আধুনিক বাসের বহর প্রস্তুত রেখেছে। গতকাল থেকে ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাস ছাড়ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে। আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত কর্মস্থলমুখী যাত্রীর চাপ অব্যাহত থাকবে বলে তার ধারণা। একসঙ্গে অতিরিক্ত চাপ না পড়ায় এবার সড়কে দুর্ঘটনা হয়েছে কম। ঈদের সময় বরিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর রেকর্ড রয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমান। একই চিত্র নৌপথে। ঈদের আগে ঢাকা থেকে এক দিনে সর্বাধিক সাতটি লঞ্চ ছেড়েছে বরিশালের উদ্দেশে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে ঈদের সময় ১০ থেকে ১৫টি লঞ্চেও সামাল দেওয়া যেত না যাত্রীর চাপ। নৌপথে অতিরিক্ত ভাড়া ছাড়াই বাড়ি ফিরেছে মানুষ। ঈদ শেষে ফিরছে স্বস্তিতে। ঈদের দ্বিতীয় দিন রবিবার চারটি, তৃতীয় দিন সোমবার পাঁচটি এবং চতুর্থ দিন মঙ্গলবার বরিশাল নদীবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে সাতটি লঞ্চ। ঢাকাগামী এমভি পারাবত-১৮ লঞ্চের কেরানি মো. তুহিন বলেন, আগের দুই দিনের চেয়ে গতকাল যাত্রীর চাপ কিছুটা বেড়েছে। সাতটি লঞ্চের কেবিনে যাত্রী পরিপূর্ণ হলেও ডেকে যাত্রী কম বলে জানিয়েছেন তিনি। বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এটা অবশ্যই সত্য যে পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ার পর বরিশাল থেকে ঢাকা বা অন্য জেলার সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ সহজ হয়েছে। আগে লঞ্চে গিয়ে ঝামেলা হতো, সিট পেত না, ওভারলোড হতো। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর প্রচুর বাস চলছে। এবার মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে আনন্দের সঙ্গে ঈদ করতে পেরেছে। আসা এবং যাওয়ায় মানুষের ভোগান্তি হয়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর