আজ ২০ মে চুকনগর গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগরে মুক্তিযুদ্ধের নৃশংসতম গণহত্যা সংঘটিত হয়। মাত্র ৬-৭ ঘণ্টার মধ্যে একই স্থানে হত্যা করা হয় প্রায় ১০ হাজার মানুষকে। বিশ্লেষকদের দাবি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এটাই সর্ববৃহৎ গণহত্যা। জনশ্রুতি আছে, ওইদিন চুকনগর বাজার ও আশপাশ এলাকা জুড়ে ছিল লাশের স্তূপ। নিহতদের রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল ভদ্রা নদীর পানি। এদিকে দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে চুকনগর গণহত্যা ’৭১ স্মৃতিরক্ষা পরিষদ। সকাল ৮টায় চুকনগর বধ্যভূমিতে পতাকা উত্তোলন ও শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান, ১০টায় শহীদদের স্মরণে ৫২ ডালি গোলাপের পাপড়ি ভদ্রা নদীতে ছড়ানো ও দুপুর ১২টায় চুকনগর কলেজ মাঠে আলোচনা সভা। সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ এ বি এম শফিকুল ইসলাম জানান, ১৯৭১ সালের এই দিন হাজার হাজার নিরীহ মানুষের রক্ত ভদ্রার পানিতে মিশেছে। পাকিস্তানি সেনারা নৌকায় উঠে নদীর পানিতে ভেসে থাকা নিরীহ মানুষগুলোকে গুলি করে হত্যা করেছে। স্বাধীনতার ৫২ বছরে রক্তের ঋণ শোধ করতে ৫২ ডালি ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে শহীদদের প্রাণঢালা শ্রদ্ধা জানানো হবে। একই সঙ্গে চুকনগর গণহত্যা দিবসকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানানো হবে। একই দাবিতে আজ ২১ মে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ও ২২ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ বিভাগের সঙ্গে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, চুকনগরে শহীদদের তালিকা তৈরির জন্য এরই মধ্যে ১৬ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারা বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামগঞ্জে গিয়ে শহীদদের তথ্য সংগ্রহ করবেন। জানা যায়, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা ও যশোরের ট্রানজিট পয়েন্ট চুকনগর। নদীবেষ্টিত মেঠোপথ হওয়ায় এ অঞ্চলে পাকিস্তানি বাহিনীর চলাচল কম ছিল। ফলে হাজার হাজার নিরীহ মানুষ নদীপথে চুকনগর এসে জড়ো হয়ে সেখান থেকে ভারতের উদ্দেশে রওনা হয়। কিন্তু ২০ মে পাকিস্তানি সেনারা ট্রাক-জিপে চুকনগর বাজার, পাশের এলাকায় ঢুকে নিরীহ মানুষকে অকাতরে গুলি করে হত্যা করে।