দেশের উত্তরাঞ্চলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল কোথাও কোথাও নদনদীর পানি কমার এবং কোথাও কোথাও বাড়ার খবর পাওয়া গেছে। বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ অব্যাহত রয়েছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের সবকটি নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে তিস্তা নদীর পানি কিছুটা কমেছে। অন্যান্য নদনদীর পানি বাড়লেও তা বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। স্থানীয় পাউবো সূত্র জানায়, গতকাল বিকালে তিস্তার পানি কিছুটা কমে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এ ছাড়া দুধকুমার নদের পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে ৩৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদীর প্রবল স্রোতে রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে নদীভাঙন প্রকট আকার ধারণ করেছে।
লালমনিরহাট : উজানের ঢল আর ভারী বৃষ্টিপাতে একদিন পর গতকাল আবারও তিস্তার পানি বেড়েছে। তবে ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। নতুন নতুন এলাকায় প্রবেশ করছে পানি। সিরাজগঞ্জ : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বাড়ছে। ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধ এলাকায় যমুনার পানি ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কাজিপুর পয়েন্টে পানি ১৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি ভাঙনও শুরু হয়েছে। করতোয়া, ফুলজোড়, ইছামতী ও বড়ালসহ অন্যান্য নদী ও খাল-বিলের পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চলের মানুষের মধ্যে বন্যা আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গাইবান্ধা : গাইবান্ধার সব নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ফলে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তার অভ্যন্তরে চরাঞ্চল থেকে পানি নেমে যেতে শুরু করেছে। স্বস্তি ফিরছে প্লাবিত অঞ্চলের মানুষের মধ্যে। তবে একই সঙ্গে বিরাজ করছে ভাঙন আতঙ্ক। গতকাল বিকাল ৩টায় ফুলছড়ি পয়েন্টে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানির উচ্চতা আগের দিনের মতোই বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।