আইনজীবী-পুলিশ সংঘর্ষ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে পদযাত্রা ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। এ সময় আইনজীবী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার আইনজীবী সমিতির সামনে থেকে এ মিছিল শুরু হয়। এরপর মিছিলটি আদালতের সামনের প্রধান সড়কে এলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে আইনজীবীরা রাস্তায় বসে পড়লে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে সাত পুলিশ সদস্য ও ১২ আইনজীবী আহত হন। পরে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে তারা সিএমএম আদালতের প্রধান ফটকে অবস্থান নেন। আহত আইনজীবীরা হলেন- মাহবুবুর রহমান খান, দেওয়ান রিপন, মোজাহিদুল ইসলাম সায়েম, কে এম মিরাজ হোসেন, সাইদুর রহমান সোহাগ, কে এম বরকত সবুজ, মাহবুব আলম আক্তার, শফিকুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম, হাজী মো. মহসীন, কাজী পনির ও এস এম হুমায়ূন কবির। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- ডিএমপির কোতোয়ালি জোনের এডিসি মুহিত কবির সেরনিয়াবাত, কোতোয়ালি জোনের এসি শাহিনুর ইসলাম, কোতোয়ালি থানার ওসি শাহিনুর রহমান, ইনসপেক্টর (অপারেশন) মোহাম্মদ নাজমুল হক, এএসআই বশির, কনস্টেবল রুহুল আমিন, আনসার সদস্য মো. সুমন আলী। বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা বলেন, আমরা সুশৃঙ্খল পদযাত্রা করছিলাম। এরপর পুলিশ এসে আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এ সময় আমাদের ১২ জন আইনজীবী আহত হয়েছেন। তবে এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনুর রহমান বলেন, বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা রাস্তায় অবস্থান নিলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তাদের সরে যেতে বলা হয়। কিন্তু তারা জোর করে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যান। এ সময় তাদের হামলায় আমাদের ৮/৯ জন আহত হয়েছেন। কোতোয়ালি জোনের এডিসি মো. মুহিত কবীর সেরনিয়াবাত বলেন, বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা করে। আমরা ফেরাতে গেলে তারা আমাদের ওপর হামলা করে। আমিসহ আমাদের ৮/৯ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আমাদের কর্মসূচি ছিল শান্তিপূর্ণ পথযাত্রা। কোর্ট থেকে বের হলে পুলিশ জঙ্গির মতো ঝাঁপিয়ে পড়ল। আইনে তো জঙ্গির ডেফিনেশন নেই। পুলিশের আক্রমণ ছিল জঙ্গির মতো আচরণ। নির্বিচারে তারা আইনজীবীদের পেটাল। তা জঙ্গিদেরও হার মানিয়েছে। তারা আমাদের আইনজীবী বোনদের টর্চার করেছে। গায়ে হাত দিয়েছে। সবাই এডিসি হারুন হতে চায়। এখন পুলিশের দুই রকম বিচার। এডিসি হারুন ছাত্রদের মারল। তারপর সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীদের ওপর হামলা করেছে। বিচার হয়নি। অথচ দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে মেরে রবখাস্ত হয়েছে। হাজারো মানুষের ওপর হামলা করেছে, তার কোনো বিচার নেই। ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. জাফর হোসেন বলেন, বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা পুলিশের ওপর হামলা করেছে। পুলিশ ধৈর্যশীলতার পরিচয় দিয়েছে। বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এদিকে জজ কোর্টে মারামারির ঘটনায় ব্যারিস্টার কায়সার কামালসহ বিএনপির ৬৬ আইনজীবীর বিরুদ্ধে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছে পুলিশ।