ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক আবুল মনসুর আহমদ মেরুদণ্ড শক্ত করে দাঁড়ানোর পক্ষে ছিলেন। তার সমস্ত কাজের মধ্যে ছিল মেরুদণ্ডের সেই দৃঢ়তা। যা বুঝেছেন তা বলেছেন, স্পষ্টভাবে বলেছেন। কারও তোয়াক্কা করেননি। সেই শক্ত মেরুদণ্ডই আমাদের প্রয়োজন।
গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ইমরান মাহফুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে দ্য নিউ এজের সম্পাদক নুরুল কবীর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আর রাজী, সাংবাদিক ও গবেষক কাজল রশীদ শাহীন ও সমকালের প্ল্যানিং এডিটর ফারুক ওয়াসিফ বক্তব্য রাখেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম।
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আজও বাংলাদেশে দারিদ্র্য রয়েছে। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণ যেটা, সেটা হলো- বৈষম্য। বৈষম্য দারিদ্র্য তৈরি করেছে, দারিদ্র্য বৈষম্য তৈরি করেনি। আবুল মনসুর আহমদ সেটা বুঝেছিলেন। এর পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন ছিল সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের। এ জন্যই তিনি সাংবাদিকতা করেছেন, সাহিত্য রচনা করেছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা এমন একটি সময়ে এসে উপস্থিত হয়েছি, যখন প্রশ্ন এসেছে এই পৃথিবী মনুষ্য বসবাসের জন্য উপযোগী থাকবে কি না।
যে ব্যক্তিমালিকানা এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেখানে সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠা না হলে এ অবস্থার পরিবর্তন হবে না। যে পতনের দিকে যাচ্ছি, তার দিকে আরও অগ্রসর হব। আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কথা শুনছি। তারা এক সময় মানুষের ওপর কর্তৃত্ব করবে। এর মালিকানা থাকবে গুটিকয়েক মানুষের ওপরে। অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে যাবে। তারা হানাহানিতে লিপ্ত হবে। তাই ব্যক্তিমালিকানাকে বিদায় করে, পুঁজিবাদের এই বীভৎস ফ্যাসিবাদী চরম রূপকে বিদায় করে দিয়ে মানবিক, সামাজিক মালিকানার সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।